চকরিয়ায় বিয়ের দাবিতে ভোর থেকে প্রেমিকের বাড়ির সামনে প্রেমিকার অনশন

fec-image

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এক তরুণীকে রাতে বাসায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. সাইফুল ইসলাম (২৪) নামের এক প্রেমিক তরুণের বিরুদ্ধে। রোববার সকাল থেকে অভিযুক্ত তরুণকে বিয়ের দাবিতে তার বাড়ির সামনে অনশন করছেন ওই প্রেমিকা তরুণী।

অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম পাড়ার আবদুল হাকিমের ছোট ছেলে। তিনি বমু পানিস্যাবিল নয়া বাজারে মুদির দোকান করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই তরুণীকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বমু পানিস্যাবিল নয়া বাজারে তার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে তুলে আনেন সাইফুল। তরুণীকে খুঁজে না পেয়ে রাত ২টায় মেম্বারকে বিষয়টি জানান তার মা। পরে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. রমিজ উদ্দিন ও কয়েকজন গ্রাম পুলিশসহ সন্দেহজনকভাবে সাইফুলের বাড়ি তল্লাশি করলে তার কক্ষে ওই তরুণীকে পাওয়া যায়।

মেম্বার মো. রমিজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি সাথে সাথে ইউপি চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আহাম্মদ মিয়াকে জানালে তারা বলেন, বিষয়টি সকালে সমাধান করা হবে। মেয়ে আপাতত ছেলের বাড়িতে থাকুক। এদিকে ভোর না হতেই ছেলের পরিবার মেয়েটিকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে সাইফুলকে বাড়ি থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। ঘর থেকে বের করে দিলে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ওই তরুণী বিয়ের দাবিতে আজ ভোর থেকে ছেলের বাড়ির সামনে অনশন শুরু করেন।

ওই তরুণী বলেন, ‘আমাদের প্রেমের সম্পর্ক ১ বছর। এর আগেও সাইফুল আমাকে পাঁচ-ছয়বার রাতে তার ঘরে নিয়ে আসে। সে অসংখ্যবার আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। গতরাতে আমি আসতে না চাইলে সে আমার আপত্তিকর ছবি ফেসবুক ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তাই আমি আসতে বাধ্য হয়েছি। রাত সাড়ে ১১টায় মোটরসাইকেলে করে সে আমাকে নিয়ে আসে। ২টায় আমার পরিবারের লোকজন ও মেম্বার আমাকে খুঁজতে সাইফুলের বাড়িতে আসে। তারা সাইফুলের রুমে আমাকে পায়। সকালে সিদ্ধান্ত হবে বলে আমাকে তাদের পরিবারের জিম্মায় দিয়ে আসে।’

তরুণী আরও বলেন, ‘তারা ভোরে সাইফুলকে সরিয়ে দিয়ে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। আমি এখন কোথায় যাবো? হয়তো সাইফুল আমাকে বিয়ে করবে না, আমার মরণ ছাড়া উপায় নাই। আমি এখন ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ভোরে ছেলের পরিবারের লোকজন আমার মোবাইল, নাক-কানের স্বর্ণগুলো নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।’

বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব বলেন, ‘রাতে আমাকে বিষয়টি রমিজ মেম্বার অবহিত করে। সকালে সিদ্ধান্ত হবে বলেছিলাম। সকাল থেকে আমি ত্রাণ বিতরণে ব্যস্ত থাকায় এখনো পর্যন্ত বৈঠকে বসতে পারিনি।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়ের পরিবারের পক্ষথেকে এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চকরিয়ায়, প্রেমিকার অনশন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন