চকরিয়ায় মৎস্য প্রকল্পে ৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট : ঘের মালিককে হত্যার হুমকি
কক্সবাজারের চকরিয়ায় শত্রুতার জেরে মিঠা পানির মৎস্য প্রকল্পে (পদ্ধতিতে) বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত পাঁচ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঘের মালিক মাছ লুটকারী ব্যক্তিকে তাৎক্ষনিক ভাবে চিহ্নিত করতে পারলে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি জড়িয়ে মারধরের ঘটনাও ঘটে। ওই সময় চিহ্নিত লুটেরাজরা ঘের মালিককে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দেন। এ নিয়ে আক্রান্ত ঘেরচাষী রবিবার (৪ আগস্ট) রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পশ্চিম বড় ইউনিয়নের চোয়ারফঁড়িস্থ মরহুম মকছুদ আহমদ চৌধুরীর মালিকানাধীন জায়গায় বর্গাচাষি মৌলভী শাহাব উদ্দিনের মৎস্য চাষের পদ্ধতির প্রকল্পে এ মাছ লুট ও চুরির ঘটনা ঘটে। বর্গাচাষি মৌলভী শাহাব উদ্দিন ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চোয়ারফঁড়ি এলাকার হোছাইন আহমদের ছেলে।
আক্রান্ত ঘেরচাষী (পদ্ধতির) মালিক মৌলভী শাহাব উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের মরহুম মকছুদ আহমদ চৌধুরীর মালিকানাধীন চোয়ারফঁড়ির ছয় একর জায়গা লাগিয়ত নিয়ে মৌলভী শাহাব উদ্দিন দীর্ঘ দশ বছর ধরে মিঠা পানিতে মৎস্য প্রকল্প (পদ্ধতি) চাষাবাদ করে আসছে। সে পদ্ধতি লাগিয়ত নিয়ে ওই প্রকল্পে পাঙ্গাস, রুই, কাতলা ও নাইলেটিকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য চাষাবাদ করে আসছিল। মৎস্য চাষের পদ্ধতির পাশ্বোক্ত ওই এলাকার নুর উদ্দিনের ছেলে মো.শাহ আলম ও তার ছেলে বিভিন্ন সময় অগোচরে তার পদ্ধতির মৎস্য প্রকল্প থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ চুরি করে নিয়ে যায়।
পরে তিনি তাদের অত্যচারে পদ্ধতির চারপাশে কাঁটা তারের ঘেরা-বেড়া দেয়। কিন্তু ঘের চাষাবাদ করতে গিয়ে এলাকার কিছু দখলবাজ প্রকৃতির লোক তার কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে আসছিল।
ঘের চাষী আরো জানান, সর্বশেষ শনিবার রাত সাড় ৮টার দিকে শত্রুতার জেরে চোয়ারফঁড়ি এলাকার নুর উদ্দিনের ছেলে মো.শাহ আলম তার ছেলে তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪-৫ জনের একদল চোর ও সন্ত্রাসীরা আমার অগোচরে মৎস্য ঘেরের কাঁটাতারের ঘেরা-বেড়া কেটে (পদ্ধতিতে) ঢুকে ঘেরের অন্তত দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা বিগত দশ বছরে আমার মৎস্য ঘের বা পদ্ধতি থেকে শনিবারে লুটকরা মাছসহ এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করেছে। তারা পেশায় এলাকার চিহ্নিত চোর। তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় গরুসহ বিভিন্ন চুরির অপবাদ রয়েছে। পদ্ধতির মাছ লুট করার বিষয়টি জানার পর পরই স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হককে অবহিত করা হয়।
মাছ লুটের ঘটনাটি শুনার পর ইউপি সদস্য তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এবং ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন তিনি। এ নিয়ে পদ্ধতির মালিক মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
পশ্চিম বড় ভেওলা ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার রাতে মৌলভী শাহাব উদ্দিনের পদ্ধতির প্রকল্প থেকে কাঁটাতারের ঘেরা-বেড়া কেটে মৎস্য ঘের থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এতে তার প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘটনার বিষয়টি নিয়ে ঘের মালিক মৌলভী শাহাব উদ্দিন ও অভিযুক্ত শাহ আলম ও তার ছেলেকে নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান।
চকরিয়া থানার (ওসি) তদন্ত এ. কে. এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, ঘটনার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ হাতে পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।