চকরিয়ায় যৌতুক দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
চকরিয়া প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘটনার পর পাষণ্ড স্বামীসহ শ্বশুড় বাড়ির সদস্যরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছে। পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটা মাতব্বর পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম নূরশেফা বেগম (২৭)। তিনি পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটা মাতব্বর পাড়ার আবদুল হাকিমের কন্যা এবং একই গ্রামের ছিদ্দিক আহমদের ছেলে আবদুল করিমের স্ত্রী।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে (এজাহার) জানা গেছে, ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ২০১২ সালের ১২ জুন চার লক্ষ টাকা দেনমোহরে নূরশেফা ও আবদুল করিমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় শারীরিক নির্যাতন চালালে স্ত্রী নূরশেফা বাদী চকরিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে স্বামী আবদুল করিমের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় আবদুল করিম পর পর দুইবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খাটে। পরবর্তীতে দুইজনের অভিভাবকদের নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দফায় দফায় সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমে দুইজনের মধ্যে সম্পর্কের আবারো জোড়া লাগে এবং যৌতুক হিসেবে আবারো নগদ ৮০ হাজার টাকা স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলরের মাধ্যমে স্বামী আবদুল করিমকে প্রদান করে। তার পরও যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় মারধ করে আসছিলেন যৌতুকলোভী স্বামী আবদুল করিম।
একইভাবে গত বুধবার (১ জুন) সন্ধ্যায় পরিবার সদস্যদের ইন্ধনে স্বামী আবদুল করিম উপর্যপুরি লাথি মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ নূরশেফা। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় নূরশেফা বেগম।
এ ঘটনায় গৃহবধূ নূরশেফা বেগমের ভাই আবুল হোছন বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন। এতে স্বামী ও পরিবারের ৪ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো তিন জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, গৃহবধূর বাপের পরিবারের কাছ থেকে মৌখিকভাবে শোনার পর পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। শুক্রবার থানায় জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করা হবে।’