টেকনাফে অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্প দরিদ্রদের জন্য নয়: জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের জন্য

টেকনাফ প্রতিনিধি: 
অতিদরিদ্রদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে সরকার কর্মসংস্থান কর্মসূচীর প্রকল্পটি চালু করেছে। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এপ্রকল্পটি অব্যাহতভাবে চালু থাকলেও দেশের সর্বদক্ষিণ সীমান্ত জনপদ টেকনাফ উপজেলায় ৬ ইউনিয়নের দরিদ্রজনগোষ্ঠী এ প্রকল্প তাদের ভাগ্যে কোন উপকারে আসছেনা। উপকারে আসছে শুধুমাত্র স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের, ফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

ইতিপূর্বে দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় হতে এ সরকারের সময়ে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর প্রকল্পের আওতায় যে পরিমান বরাদ্ধ দিয়েছিল ২০% শতাংশ কাজ করে সিংহভাগ অর্থ ভাগভাটোয়ারা করে পকেটস্থ করেছে, সংশ্লিষ্ঠরা। ফলে শ্র“মিকেরা তাদের ন্যাক্য মজুরী থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। এ প্রকল্প থেকে শ্র“মিকের ভাগ্য পরিবর্তনের জনপ্রতিনিধি আমলা, ব্যাংক ম্যানেজার ও ট্যাগ কর্মকর্তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে মাত্র। ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী (হজিগিলি) ২য় পর্যায়ের দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা হতে টেকনাফ সীমান্ত উপজেলার ৬ ইউনিয়নের জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।

এর মধ্যে ননওয়েষ্ট ৪০ লাখ টাকা। মোট শ্রমিক সংখ্যা ৪৬১০ জন। এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা পর্যায়ে ২১ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি কমিটি রয়েছে কমিটির সভাপতি উপজেলা নিবাহী অফিসার প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় সংসদ উপদেষ্ঠা উপজেলা চেয়ারম্যান সহ চেয়ারম্যঅন ও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এ কমিটিতে রয়েছে। এ কমিটি কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে এ কমিটির প্রতিফলন নেই। যেমন কাজীর গুরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই।

এসব অর্থ সরকার গ্রামের বেকার শ্র“মিকদের দেয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপসহকারী প্রকৌশলী (ইজিপিপি) এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধির পি,আইসি, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ যৌথ যোগ সাজশে ২০% শতাংশ কাজ করে বাকি অর্থ হরিলুট হয়ে টপটুবটম বন্ট করে দেয়। ফলে এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত এবং বেকার শ্রমিকের জীবনের ভাগ্যের পরিবর্তন আসছেনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান, শ্রমিকের জন্য বরাদ্ধের সিংহভাগ অর্থ জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের পকেটস্থ করে ওরা সুবিধা হাসিল করছে। টেকনাফ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম রাসেলের নেতৃত্বে একদল সংবাদকর্মী অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর (ইজিপিপি) ২য় পর্যায়ের গৃহীত প্রকল্প সমূহ কাজের গুনগতমান নির্ণয় ও অগ্রগতি দেখার জন্য সাবরাং, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া ও হ্নীলা ইউনিয়নে সরেজমিন পরিদর্শন করে স্বচিত্র ছবি সহ কাজের অনিয়ম দুর্নীতির মহোৎসব সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে বস্তনিষ্ট সংবাদ প্রকাশিত হবার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।

পরে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ও গুনগত মান যাছাই করার জন্য প্রকল্প সভাপতি ও সরেজমিন পরিদর্শন করে এর সত্যতা প্রমাণ মিলে। বিশেষ করে বাহারছড়া, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ টেকনাফ সদর ও সেন্টমার্টিন দুর্গম এলাকায় কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ভয়রাহ। সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আঃলীগের সভাপতি অধ্যাপক মোঃ আলী জানান, ২০০৯ সাল থেকে অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থার কর্মসূচী চালু হয়েছে।

উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে লোটপাট করে নিচ্ছে। নিয়মনুযায়ী শ্র“মিকেরা তাদের জবকার্ডসহ ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এ নিয়ম অমান্য করে স্ব স্ব প্রকল্পের মেম্বারেরা টাকা উত্তোলন করছে ব্যাংক ম্যানেজারের যোগসাজশে। যার ফলে শ্র“মিকেরা তাদের শ্র“মের প্রাপ্ত টাকা ওরা লুটেপড়ে পকেটস্থ করছে।

তিনি আরো বলেন, কর্মসৃজন, টি আর ও কাবিখা প্রকল্পসমূহ যে উদ্দেশ্যে সরকার প্রদান করেছেন, তাতে এলাকার কাংখিত উন্নয়ন হচ্ছেনা। এতে করে সরকারের এ মহৎ উদ্দেশ্যে বিফল ও ভাবমূর্তী ক্ষন্ন হচ্ছে। তিনি উক্ত প্রকল্প সমূহ বন্দের জন্য সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে শিগ্রি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন