ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল শুরু ১ ডিসেম্বর, ভাড়া নির্ধারণ

fec-image

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের নির্মাণকাজ মেগা প্রকল্পটি সমাপ্তির পথে। আগামী ১৩ নভেম্বর এটি উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে ১ ডিসেম্বর থেকে। এ রুটে দুটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব থাকলেও, ঢাকা থেকে প্রথমদিকে দিনে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলবে।

রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, দিনে একটি ট্রেন ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬.৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। কক্সবাজার থেকে দুপুর ১টায় যাত্রা করে রাত ৯.১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ফিরতি পথেও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করবে। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে ট্রেনটির।

ট্রেনটির ছয়টি নাম প্রস্তাব করেছে রেলওয়ে। এগুলো হলো– ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’, ‘হিমছড়ি এক্সপ্রেস’, ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’, ‘ইনানী এক্সপ্রেস’, ‘লাবণী এক্সপ্রেস’ ও ‘সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেস’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাম চূড়ান্ত করবেন।

ট্রেনে দুটি খাবার বগি, একটি পাওয়ার কার, তিনটি এসি কেবিন, পাঁচটি এসি চেয়ার, ছয়টি শোভন চেয়ার এবং একটি নন-এসি ফার্স্ট সিট বগি থাকবে। ঢাকা থেকে যাত্রার সময় আসন সংখ্যা হবে ৭৯৭টি। ফিরতি পথে আসন হবে ৭৩৭টি। রেল সূত্রের ভাষ্য, আপাতত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা নিশিথার বগি দিয়ে চালানো হবে ঢাকা-কক্সবাজারের ট্রেন। তূর্ণা নিশিথায় বিকল্প রেক দেওয়া হবে।

এ সময়সূচির সত্যতা নিশ্চিত করে মহাপরিচালক কামরুল আহসান জানিয়েছেন, পরবর্তী সময়ে এ রুটে ট্রেন বাড়বে। অন্যদিকে যাত্রী চলাচল নিয়ে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে।

ঢাকা-কক্সবাজার সর্বনিম্ন ৫১৫, সর্বোচ্চ ভাড়া ২০৩৬ টাকা

রেলওয়ের বাণিজ্যিক শাখা জানিয়েছে, চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে কক্সবাজারের প্রকৃত দূরত্ব ১৫০ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। তবে রেলওয়ের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ১০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের সেতুর জন্য অতিরিক্ত ভাড়া ও দূরত্ব (পয়েন্ট চার্জ) নির্ধারণ করছে। চট্টগ্রাম- কক্সবাজার রুটে সাতটি সেতুর জন্য বাড়তি ৫৪ কিলোমিটারের ভাড়া আরোপ করা হয়েছে।

বাড়তি পয়েন্ট চার্জ যুক্ত করে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে বাণিজ্যিক দূরত্ব ২০৫ কিলোমিটার ধরে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। এরসঙ্গে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের ৩২১ কিলোমিটারের বাণিজ্যিক দূরত্ব বিবেচনায় ঢাকা-কক্সবাজার পর্যন্ত ভাড়া পুনর্নির্ধারণ হবে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের সর্বমোট ৫৫১ কিলোমিটার বাণিজ্যিক দূরত্ব ধরে ভাড়া নির্ধারণ করা হচ্ছে।রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এ পথে নন-এসি অর্থাৎ শোভন চেয়ারে ৫১৫ টাকা ও এসি সিটে ৯৮৪ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। এসি সিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ভাড়া হবে ১ হাজার ১৩২ টাকা। ভ্যাটসহ এসি কেবিনে ১ হাজার ৩৬৩ ও এসি বার্থে ভাড়া পড়বে ২ হাজার ৩৬ টাকা।

প্রসঙ্গত, রেল নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা পর্যটন নগরীতে ট্রেন নিতে প্রকল্পটি ২০১০ সালে অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প সংশোধনে ব্যয় বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, ট্রেন, ঢাকা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন