দেবে গেছে সেতু, ঝুঁকি নিয়ে কয়েক হাজার মানুষের চলাচল
কয়েকটি গ্রামের একমাত্র চলাচলের সম্বল পাহাড়ের ঝিরি উপর তৈরিকৃত ৩০ বছরের পুরানো গার্ডার সেতু। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে থাকেন। কিন্তু গত বছরের বন্যাতে সেতুটি ডুবে যায়। যার ফলে এখন ব্রিজের এক পাশে দেবে গেছে। দেবে যাওয়ার একপাশ পিলারও ধসে পড়ার অবস্থা হয়েছে। এমন চিত্র দেখা গেছে বান্দরবানের সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের ক্যমলং পাড়াতে।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের সেতুর উপর চলাচল করে প্রায় দেড় হাজার পরিবারের মানুষ। ঝিরি উপর নির্মিত এই সেতুটি এলাকাবাসীদের এক মাত্র ভরসা। প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে মাহিন্দ্রা, ট্রাক, সিএনজিসহ বিভিন্ন রকমের যানবাহন চলাচল করে থাকে। কিন্তু গেল বছরের ভারী বন্যার কারণে ডুবে যায় সেতু্টি। এরপর ধসে পড়ার পরিণত হয়। ধীরে ধীরে সেতুর একপাশে দেবে যাওয়াতেই যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এতে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিরির উপর তৈরী করা হয়েছে সেতুটি। বন্যার পর একপাশ দেবে যাওয়াতেই সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতুর নিচের অংশের কংক্রিট ধ্বসে পড়ে যাচ্ছে। যে কোন সময় সেতুটি পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার উপরে ঝুকিঁ নিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। সেতুটি দিয়ে এখনো শিক্ষার্থীরাসহ সর্বসাধারণের মানুষ চলাচল করছে। সেতুটি ধ্বসে কিংবা ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেলে জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি নানা সমস্যা সম্মুক্ষীন হবে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গ্রামের চলাচলের একমাত্র ভরসা এই সেতুটি। গত বছর ভারী বন্যাতে সেতুটি ডুবে যাওয়াতেই এখন একপাশে ডেবে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে কয়েকহাজার মানুষ চলাচল করতে হচ্ছে। কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায় সেটি নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে তারা। গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়েও সেতু নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া সেতুটি ব্যবহার করা না গেলে ২১ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ১০ কিলোমিটার সড়ক অচল হয়ে পড়বে। এতে যেমন সড়ক জরাজীর্ণ পরিণত হবে তেমনি কয়েকহাজার মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।
সেতুটির পাশে চায়ের দোকানদার সানু চিং ও মাহিন্দ্রা চালক উমং থোয়াই মারমা বলেন, এই সেতু দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন মালামালের যানবাহন চলাচল করে। গাড়ি করে যখন সেতুটি দিয়ে পার হয় তখন ভয় করে। মনে হয় সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। কখন যে দুর্ঘটনায় পড়ে সেটি নিয়ে আমরা চিন্তায় আছি।
কুহালং ইউপি চেয়ারম্যান মংপু মারমা জানান, গত বছর বন্যাতে ডুবে যাওয়াতেই সেতুটি এক পাশে দেবে গেছে। তাছাড়া সেতুটি ৩০ বছরের পুরানো। এই সেতু দিয়ে সারাদিন মানুষ চলাফেরা করছে। সেতুটি ধসে গেলে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল রহমান মজুনদার বলেন, সড়ক নির্মাণের সময় সেতুটি ভালো থাকায় নতুন করে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। এখন সেতুটি নতুনভাবে নির্মাণ করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।