নবজাতককে মায়ের দুধ ছাড়া অন্য খাবারের পরার্মশ দিলে জেল-জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সন্তান জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়না। এমনকি পানিও না। মায়ের দুধ’ই যথেষ্ট। কিন্তু কিছু চিকিৎসক নবজাতকের পরার্মশ পত্রে লিখে দিচ্ছেন বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট ও কৌটাজাত দুধ ও ভিটামিনের নাম। অভিভাবকরাও বিশ্বাস করে নবজাতককে ওই সব  দুধ ও ভিটামিন খাওয়াচ্ছে। এই খাবার নবজাতকের শরীরে কোন কাজে আসে না। বরং ক্ষতি হয়। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের এই কাজটি সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বে-আইনী। মূলত ওই সব কোম্পানির পন্য থেকে কমিশন নেওয়ার জন্য অসাধু চিকিৎসকরা এমন কাজ করছে।

আর এসব অসাধু চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, কোন চিকিৎসক ৬ মাসের আগে কোন শিশুকে কোন দুধ বা ভিটামিন খাওয়ানোর পরার্মশ দিতে পারবে না। কারণ এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। যদি মাতৃমৃত্যূর মতো অবস্থা হয় তাহলে ভিন্ন কথা। কোন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এ ধরনের পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ৩ বছরের জেল ও সাথে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, শহরের অনেক নামকরা চিকিৎসকও নবজাতকের শারীরিক উন্নতির জন্য বিভিন্ন কোম্পানির দুধ ও ভিটামিন লিখে দেয় প্রেসক্রিপশনে। আর ওই চিকিৎসকের প্রতি আস্থা থাকায় অভিভাবকরা দামী-দামী কোম্পানির দুধ ও ভিটামিন খাওয়ায়। কিন্তু অনেক অসচেতন অভিভাবক জানেন না এর অন্তরালে কি ঘটছে। চিকিৎসক ওই পন্য থেকে কমিশন পাওয়ার জন্য এ কাজ করে থাকে। এতে ঠকছে নবজাতকের অভিভাবকরা। সবচেয়ে বড় বিষয়, এ দুধ বা ভিটামিন আদৌ কোন কাজে আসছেনা শিশুর শরীরে। বরং ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।

শহরের বৈদ্যঘোনার ইলিয়াস আহম্মদ নামে এক ব্যক্তি জানান, নবজাতকদের দুধ বা ভিটামিন লিখে দেওয়ার প্রবনতা প্রায় চিকিৎসকের মধ্যে দেখা যায়। এমনকি অনেক সুনামধন্য চিকিৎসকরাও এমন করে থাকে। যেমনটি হয়েছে তার সাথে। আর চিকিৎসকরা দুধ বা ভিটামিন লিখে দেওয়ার সময় নিশ্চিত করে দেয় যেন ওইটাই নেয় অন্যকিছু না নেয়।

শিশু চিকিৎসক ডাক্তার অরূপ দত্ত বাপ্পী জানান, সন্তান জন্মের পর থেকে তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল মায়ের দুধ। মায়ের শাল দুধ বাচ্চার শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। আর নবজাতকদের ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ ছাড়া কোন কিছু খাওয়ানোর দরকার নেই। তবে শিশুর মা মারা গেলে বা শারীরিক কোন সমস্যা হলে সেই ক্ষেত্র শিশুর খাবারের জন্য অন্য কোন ব্যবস্থা করতে হবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. পু চ নু জানান, কোন চিকিৎসক ৬ মাসের কম বয়সী শিশু বা কোন নবজাতককে যদি কোন কোম্পানির দুধ বা ভিটামিন লিখে দেয় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ধরনের প্রতারণার শাস্তি ৩ বছরের জেল এবং ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হয়। এ ব্যাপারে সকলের সচেতন হওয়া উচিত।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন