নাইক্ষ্যংছড়িতে অপহরণ মামলায় বালু ব্যবসায়ীকে আসামি করে হয়রানীর অভিযোগ

fec-image

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের নিরীহ এক বালু ব্যবসায়ীকে অপহরণ চেষ্টা মামলায় আসামি করে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে এলাকায় সাধারণ জনগণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে একটি সন্তান অপহরণ চেষ্টার ঘটনা নিয়ে ১ মে থানায় (নং- ১/৬৮) মামলা দায়ের করেন ওই উপজেলার বাইশারী ক্যাঙ্গার বিল এলাকার বাসিন্দা মো. রশিদ। থানায় বাদীর দায়েরকৃত মামলায় আসামি করা হয়েছে আটক দুই রোহিঙ্গাসহ ৭জনকে। এতে মামলার ৫নম্বর আসামি করা হয়েছে চকরিয়ার খুটাখালী এলাকার বালু ব্যবসায়ী মৃত বশির আহমদের ছেলে লিটনকে। তাকে ওই অপহরণ চেষ্টার ঘটনায় আক্রোশের কারণে ষড়যন্ত্র মূলক ঈর্ষান্বিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী মামলার আসামি লিটন ও তার পরিবার।

ভুক্তভোগী বালু ব্যবসায়ী ও মামলার আসামি লিটন সাংবাদিকদের বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অপহরণ চেষ্টার ঘটনা হয়েছে এ ঘটনার সাথে বিন্দুমাত্র আমার সংস্পর্শ নেই। কোথায় নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী ক্যাঙ্গার বিলের ঘটনা আর আমি হলাম খুটাখালী বাসিন্দা। এই মামলায় আমাকে স্থানীয় কিছু কুচক্রী দালাল মহল ব্যবসায়ী ভাবে ঈর্ষান্বিত হয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মামলার এজাহারে ঘটনার যে সময় উল্লেখ করেছে ওইদিন আমি কোথায় ছিলাম তা সরেজমিন তদন্ত করে আসল তথ্য পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, মূলত অপহরণের যে ঘটনা বাইশারী এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা চলাকালীন সময় ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় ওইদিন আমি বালু ব্যবসার একটি সালিশী বৈঠক নিয়ে চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের অফিসে ছিলাম। ওই বৈঠকে খুটাখালী ও চকরিয়ার অন্তত ১৫-২০ জন লোকসহ বালু ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এধরণের লোকজনের সাথে সালিশী বৈঠকে ছিলাম। যা স্থানীয় বেশকিছু গণমাধ্যমকর্মী অবগত রয়েছেন। এহেন মামলায় বালু ব্যবসায়ীকে আসামি করার ঘটনা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

অপরদিকে, এ মামলার বাদী মো. রশিদ জানান, তিনি এবং ভিকটিম তার ছেলে মামলার ৫নম্বর আসামী লিটনকে নাকি তারা চিনেন না। আইনশৃঙ্খলার লোকদের কাছে আটক রোহিঙ্গারা লিটন নাম উল্লেখ করেছে। কোন লিটন খুঁজতে গিয়ে খুটাখালীর মানুষ তার পিতার নাম ও ঠিকানা জানিয়েছে। খুটাখালী এলাকায় লিটন নামের আরও অনেকে আছে জানালে তিনি বলেন “সেখানকার লোকজন পিতার নাম ও ঠিকানা যা জানিয়েছে সে অনুযায়ী আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির বলেন, খুটাখালীর বালু ব্যবসায়ী লিটন মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সময় আমিসহ একটি জরুরী সালিশী বৈঠকে ছিলাম। তাকে খুটাখালীর কিছু দালাল চক্ররা ষড়যন্ত্র মূলক হয়রানির চেষ্টা চালাচ্ছে। মূলত ব্যবসায়ী ভাবে হয়রানী করার জন্য তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

তবে এজাহার সুত্রে জানা গেছে, উল্লেখিত সময়ে বাদী মো. রশিদের ছেলে তারেক রহমান (১৫) বন্য হাতীর কবল থেকে রক্ষা পেতে ক্যাঙ্গারবিলে তাদের ধানক্ষেত পাহারা দিচ্ছিল। এসময় রাস্তা দেখিয়ে দেয়ার অজুহাতে আসামিরা তার হাতমুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরদিন ৩০ এপ্রিল সকাল ৫টায় খুটাখালী থেকে সিএনজি যোগে যাত্রাপথে রামু চা-বাগান এলাকায় তারেকের হাতের ইশারা দেখে স্থানীয় লোকজন গতিরোধ করে। এসময় খবর দিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী লোকজন ঘটনাস্থল থেকে উখিয়া বালুখালী এলাকার ১২নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নুরুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন (৩০) ও তার ভাই আয়াত উল্লাহ (২৫) কে আটক করে। সে সময় ঘটনাস্থলে বাদী মো. রশিদের সাথে উপস্থিত ছিলেন তার মামা খুটাখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত আলী আকবরের পুত্র গোলাম আকবর (৪০)।

পরদিন এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মো. রশিদ বাদী হয়ে ৭ জনের নাম ঠিকানা উল্লেখ করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। অথচ এ মামলার বাদী ৫নম্বর আসামি খুটাখালীর বালু ব্যবসায়ী মো. লিটনকে চিনেন না বলে গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নাইক্ষ্যংছড়ি, বালু ব্যবসায়ী, মামলা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন