নাইক্ষ্যংছড়িতে তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ, আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা

fec-image

শীত জেঁকে বসেছে পাহাড়ি অঞ্চল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে। ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতায় জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম এলাকাগুলোতে পাহাড়ি দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষের জবুথবু অবস্থা। এছাড়া শীতজনিত কারণে সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এখানকার মানুষ। তবে এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

পাহাড়ি নারী নিংলে মুরুং বলেন, আমাদের পাড়ার সবাই গরিব। চাহিদামতো শীতের কাপড় কেনা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সরকারিভাবে যদি আমাদেরকে কম্বল দিয়ে সহায়তা করা হয় তাহলে ভালো হতো।

আরেক পাহাড়ি নারী মেচিং মারমা বলেন, অন্যবারের চেয়ে এ বছরে বেশি শীত পড়েছে। শীত থেকে রক্ষা পেতে আমরা আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বেশি শীত পড়লেও আমরা পাহাড়ে যারা বসবাস করছি তাদের খবর কেউ রাখে না। আমরা চাই এনজিও বা সরকার আমাদের শীতবস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করুক।

পাহাড়ে বসবাসরত তমফ্রে মুরুং বলেন, এ বছর বেশি শীত পড়েছে। আমাদের গরম কাপড় যা আছে, তা দিয়ে শীত ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র শীতের কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ায় পরিবার-পরিজনের খাদ্য যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষদের।

এ বিষয়ে বাঙালি শ্রমিক নুরুল কবির বলেন, এ বছর অতিরিক্ত শীতের কারণে আমরা কোনও কাজ ঠিকমতো করতে পারছি না। কাজ করতে না পারায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে শীতজনিত কারণে উপজেলায় ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

উপজাতীয় নেতা জানান, তীব্র শীতে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী ও পাহাড়ে বসবাস রত লোকজনের মাঝে কম্বল বিতরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই বিত্তবান দের অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাই।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক (শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ) আবু জাফর মোহাম্মদ সেলিম বলেন, শীতজনিত কারণে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা যথা সাধ্য চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি।

এদিকে দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষজনের শীতের কষ্ট লাঘবে গরম কাপড় ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নাইক্ষ্যংছড়ি, শীত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন