নাইক্ষ্যংছড়িতে বন্যায় কৃষি বিভাগের ১ কোটি ৬৯ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি

photo baishari copy

মো.আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়িতে স্মরণকালের টানা ৪৮ ঘণ্টার বন্যায় কৃষি বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার ঘুমধুম, বাইশারী ও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে বন্যার পানিতে ৮৮হেক্টর জমির ফসল প্লাবিত হয়েছে। এতে পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে ৫২হেক্টর জমির চাষাবাদ। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে যার ক্ষতির আনুমানিক পরিমাণ ১কোটি ৬৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

জানা গেছে, গত ২৩ জুন থেকে নাইক্ষ্যংছড়িতে ভারি বর্ষণ শুরু হলে ২৪ ও ২৫ জুন টানা দুই দিন পানিবন্দি হয়ে পড়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, বাইশারী, ঘুমধুম ইউনিয়নের কিছু অংশ। এছাড়াও দোছড়ি ও সোনাইছড়িতেও পাহাড়ী ঢলের পানিতে চাষাবাদ ও বিভিন্ন বাগানের ক্ষতি হয়।

এতে উপজেলায় ৯ হেক্টর আউস উফশী ফসল, আউশ জুম ৮ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১ হেক্টর, গ্রামীণ সবজি ৬১ হেক্টর, আদা ও হলুদ ৭ হেক্টর, মিশ্র ফল বাগান ২ হেক্টর জমির চাষাবাদ ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গ্রামীণ সবজি চাষাবাদে। এতে গ্রামের ক্ষুদ্র চাষীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

অভিজ্ঞ কৃষকদের মতে, কৃষিতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে না পারলে এর প্রভাব পড়বে জীব-বৈচিত্রের উপর। বন্যা কবলিত এলাকায় আমনের ক্ষতির পাশাপাশি কলা বাগান, আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ নষ্ট হয়ে গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর এলাকায় কৃষি বিভাগের দায়িত্বরত উপ-সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা মুহিবউল্লাহ জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় তাঁর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ১হেক্টর সম্পূর্ণ সবজি ক্ষেতসহ আরো প্রায় দেড় হেক্টর চাষাবাদ ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষয় ক্ষতির বিষয়ে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের দক্ষিণ নারিচবুনিয়া এলাকার গ্রামীণ সবজি চাষী ছমুদা বেগম, নজির আহামদ, ফরিদুল আলম, কবির আহামদ, দক্ষিণ বাইশারীর এখলাসুর রহমান জানান, টানা দুই দিনের বন্যায় তাদের চাষাবাদের আদা-হলুদ, ও সবজি ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে পানিতে তলিয়ে গেছে। অতীব কষ্টে বহু অর্থ ব্যয় করে তারা এসব চাষ করেছিলেন বলে জানান।

অপরদিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার মো: আজিজ, শাহজাহান, ফকির আহামদ জানান- ভারি বৃষ্টিপাত ও তুমব্রু খালের জলোচ্ছাসে আখ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের দায়িত্বরত মাঠ কর্মকর্তা নিয়মিত এলাকায় না থাকায় বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা সম্ভব নয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো: জাহিদুর রহমান জানান- ২৩-২৭ জুন পর্যন্ত প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলায় ৮৮হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকলে চাষকৃত জমিতে অন্তত ১০৭৪ মে:টন ফসল উত্তোলন করে কৃষকরা অন্তত ১কোটি ৬৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এ সংক্রান্ত সংশোধিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, উপজেলায় ১৫০ হেক্টর আউস উফশী ফসল, আউশ জুম ৬১২ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১০ হেক্টর, গ্রামীণ সবজি ২৫২ হেক্টর, আদা ও হলুদ ২২৩ হেক্টর, মিশ্র ফল বাগান ৩৮৯১ হেক্টর জমি রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment
আরও পড়ুন