নাইক্ষ্যংছড়িতে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী ৩ সন্তানের জননীকে রেখে স্কুল ছাত্রী নিয়ে উধাও

fec-image

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় পাষন্ড স্বামী শারীরিক নির্যাতনের পর স্ত্রী সহ ৩ সন্তানকে ফেলে রেখে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। আইনী সহায়তা পেতে স্ত্রী আরেফা বেগম (৩১) বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় স্বামী, শশুড়-শাশুড়ী সহ স্কুল ছাত্রীকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড হলদ্যাশিয়া এলাকায়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, বিগত ১২ বছর পূর্বে হলদ্যাশিয়া এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে আব্দুল গনি (৩৫) এর সাথে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড উত্তর বাইশারী এলাকার আব্দু সালামের মেয়ে আরেফা বেগমের। তাদের সংসারে বর্তমানে এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে শশুড়-শাশুড়ির প্ররোচনায় স্বামী আব্দুল গনি যৌতুকের টাকা চেয়ে চাপ দিত। বাধ্য হয়ে আরেফা বেগমের পিতা তার মেয়ের ভবিষ্যত চিন্তা করে একটি ব্যাটারি চালিত টমটম গাড়ি সহ দুই লক্ষ টাকা নগদ প্রদান করে।

এছাড়া স্ত্রী আরেফা বেগম বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে আরও ২ লক্ষ টাকা ঋন নিয়ে স্বামীর হাতে তুলে দেয়। কিন্তু স্বামীর পেট ভরে না। আরও টাকা প্রয়োজন তার। টাকার জন্য প্রায় সময় মারধর করত স্ত্রী আরেফা বেগমকে। কিন্তু সন্তানদের সুখের আশায় কাউকে মুখ ফোটে বলতে পারেননি তিনি। বাধ্য হয়ে সয়ে গেছে নানা নির্যাতন। কিন্তু বেরসিক স্বামী গত ৩১ মে আবারো ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। স্ত্রী আরেফা বেগম তার পিতার আর্থিক অবস্থা ভাল নয় বলে যৌতুক প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। স্বামী আব্দুল গনি আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে স্ত্রী আরেফা বেগমকে মারধর করে ও অশ্লীল গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও না আসায় স্ত্রী আরেফা বেগম চিন্তায় পড়ে যায়। পরে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে জানতে চাইলে স্বামী আব্দুল গনি জানায় সে অন্য আরেকটি মেয়ে বিয়ে করেছেন। পরে জানতে পারে, মেয়েটির বাড়ি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায়। সে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বর্তমানে তারা কোথায় আছে জানে না স্ত্রী আরেফা বেগম।

নির্যাতনের শিকার স্ত্রী আরেফা বেগম জানান, শারীরিক নির্যাতনের পর অসুস্থ শরীর নিয়ে তার পৈত্রিক বাড়িতে চলে এসেছেন এবং সন্তানদের নিয়ে এখন পিতার বাড়িতেই অবস্থান করছেন। তার স্বামীর খোজ পেতে সহযোগীতা সহ প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্কুল ছাত্রীর বাবা বেলাল হোসেন জানান, তার মেয়ে কোচিং পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে আলীকদম থানায় একটি নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করলেও তারা অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে পাননি। বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জননী, নাইক্ষ্যংছড়ি, যৌতুক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন