ঈদগাঁওতে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে দুই সন্তানের জননীর ধর্ষণের মামলা

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে সোয়াইফুল হক নামের ছাত্রলীগ নেতার অবৈধ সম্পর্কে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে দুই সন্তানের এক জননী। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করলেও এখন সে লাপাত্তা।

সোয়াইফুল হক ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়নের দক্ষিণ সাতজোলাকাটা গ্রামের প্রবাসী এচারুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় ঈদগাঁও থানায় ধর্ষণ মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী একই এলাকার মৃত আবুল শামার মেয়ে।

তিনি জানান, পবিত্র কোরআন মাথায় নিয়ে এবং হুজুর ডেকে বিয়ে করেন। একাধিক ভাড়া বাসায় থেকে দাম্পত্য জীবন-যাপন করেন। ইতোমধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হলে জোরপূর্বক দুইবার গর্ভপাত ঘটান। তৃতীয় দফা গর্ভপাত করতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর মার্যাদা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর থেকে ভাড়া বাসায় রেখে পালিয়ে যায়।

এই মুহূর্তে বৈবাহিক সম্পর্কের সামাজিক মর্যাদা না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায় সোয়াইফুল হক। তার ব্যবহারের সমস্ত নাম্বার বন্ধ করে দিয়েছে। পিতার ইন্ধনে প্রবাসে পাড়ি জমানোর তোড়জোড় শুরু করেছে।

সোয়াইফুল হক নারীলিপ্সু। তার হাতে এর আগে আরেকটি সংসার ভেঙেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

জানা যায়, ওই নারীর আগের সংসারের দুইটি সন্তান রয়েছে। পরকিয়ার জেরে সেই সংসার ভেঙ্গে যায়। নতুন সম্পর্ক হয় সোয়াইফুল হকের। পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার দুই মাসের মাথায় মেয়েটির পিতা মারা যায়। এই সুযোগে প্রতারণামূলক যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলে সোয়াইফুল।

ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুহেনা বিশাদ বলেন, ‘গোপনে এক নারীকে বিয়ে করে অন্তঃসত্ত্বা করে সামাজিক মার্যাদা না দেওয়ার অভিযোগটি শুনেছি দীর্ঘদিন আগে। বিষয়টি নিয়ে একবার আবদুর রাজ্জাক মেম্বারসহ আমরা একটা সালিশি বৈঠকও করি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় যে কোনভাবে এটা সমাধান করার জন্য সোয়াইফুল হককে অনুরোধ করা হয়। তিনি সবসময় বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যাওয়ায় এটি আর সমাধান করা হয়নি।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিশাদ আরো বলেন, ‘সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে সোয়াইফুল হককে ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায়। কেন্দ্র থেকে আমাদের কমিটি স্থগিত করে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।’ বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগ দেখবে বলে জানান আবুহেনা বিশাদ।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোয়াইফুল হক। তিনি বলেন, ওই নারী দুই সন্তানের জননী। সম্পর্কে চাচি হয়। তার সাথে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব। সে কারণে আমাকে ফাঁসাতে অপচেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, ভিকটিমের বক্তব্য ও যাবতীয় তথ্য উপাত্ত যাচাই করে মামলা নিয়েছি। মেডিকেল রিপোর্ট এবং ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট আসার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আসামি জামিনে থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান থানার ওসি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঈদগাঁও, ছাত্রলীগ, জননী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন