প্রশাসন নির্বিকার

ঈদগাঁও জুড়ে ফসলি জমির টপ সয়েল লুট থেমে নেই!

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা জুড়ে শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই ফসলি জমির টপ সয়েল লুট চলছে রাত- দিন। যার কারণে উপজেলার ফসলি জমিগুলো গভীর গর্তের কারণে জলাভূমিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সন্ধ্যার আধাঁর ঘনিয়ে আসতেই মেতে উঠে জমির উর্বর অংশ লুটের মহোৎসব। এসব মূল্যবান মাটি চিহ্নিত একটি সিন্ডিকেট বিক্রি করছে উপজেলার অনুমোদনহীন অর্ধডজন ইটভাটায়। কৃষকের পেটে লাথি মেরে মাটিখেকো সিন্ডিকেট এবং ভাটা মালিকরা কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও প্রশাসন নির্বিকার।

স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহখানেক আগে থেকে উপজেলার ফসলি জমি ভোমরিয়াঘোনা, পোকখালী তেইক্কাবিল, চুলুবনিয়াবিল, গোমাতলী বাইক্কার চড়া, জালালাবাদের ধনকা বিল, ঈদগাঁও’র ঝাইক্কাকাটা, ভোমরিয়াঘোনা, পালপারাবিল, ইসলামাবাদের চইদ্দকাইন্না, গজালিয়া, বোয়ালখালীর শতশত একর দুই ফসলি, তিন ফসলি জমি গুলোতে দৈত্যাকারের এক্সেভেটর (ভেকু) নামিয়ে টপ সয়েল কাটা শুরু করেছে। এসব মাটিখেকো চক্র ও ভাটা মালিক পক্ষ থেকে এলাকাভিত্তিক কিছু সিন্ডিকেট মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। বিনিময়ে জমি মালিক ও কৃষকদের ফসলি জমির মাটির উর্বর অংশ লুট করা শুরু করে। এ সিন্ডিকেট রাত নামলেই শুরু করে টপ সয়েল কাটা। ডজন এক্সেভেটর ও কয়েক অর্ধশত ডাম্পার জমিতে নেমে সারারাত ধরে মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় সরবরাহ করে। যার কারণে একদিকে ফসলি জমি গর্ত হচ্ছে, ডাম্পারের বেপরোয়া চলাচলে নষ্ট হচ্ছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ঘাট। উপজেলা জুড়ে এসব ডাম্পারের বেপরোয়া চলাচলে সকলে চরম দুর্ঘটনা ঝুঁকিতে রয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আবদুল হক জানান, কয়েকদিন আগে এক বিধবার সবজি ক্ষেতসহ মাটি কেটে নিয়ে যায় তারা। অপর চাষী হারুনর রশিদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এসব জমি থেকে টপ সয়েল কেটে নেয়ায় ফসলি জমিগুলো অনেক নীচু হয়ে গেছে। তাই আগের মত ফলন হয়না। নীচু হয়ে যাওয়ায় অনেক জমি জলাশয়ে পরিণত হয়ে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

জমির মালিকরা বলেন, এসব জমিতে ফলন কম হওয়ায় লোকসানের ভয়ে ধানচাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। এর ফলে এলাকায় খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শীত মৌসুমের শুরু থেকেই এসব মাটিখেকো চক্র ও ভাটা মালিকরা পরিবেশ ও জনবিধ্বংসি এ অপকর্ম অব্যাহত রাখলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ নির্বিকার বলে মত প্রকাশ করেছে। তারা জনস্বার্থে এসবের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সরকারি রাস্তা ঘাট ও কৃষকদের জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে উপজেলার এসব কৃষি জমি এলাকা জুড়ে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের বিচরণ থাকলেও রহস্যময় কারণে তারা দেখেও না দেখার ভান করে আছে বলে দাবি করেছে কৃষক ও জমি মালিক কতৃপক্ষ ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমার ফোনে একাধিক কল দিয়েও রিসিভ না করায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঈদগাঁও
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন