নাইজারে ক্ষমতাসীন দলের কার্যালয়ে আগুন দিলেন অভ্যুত্থানে সমর্থনকারীরা

fec-image

সেনা অভ্যুত্থানের পর আফ্রিকার দেশ নাইজারে সদ্য পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমের রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন অভ্যুত্থানের সমর্থনকারীরা। রাজধানী নিয়ামেইয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় মোহাম্মদ বাজোমের রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে পাথর ছোড়া হয়। কার্যালয়ের বাইরে গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। মোহাম্মদ বাজোম রাজনৈতিক দল নাইজেরিন পার্টি ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড সোশ্যালিজমের (পিএনডিএস) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য।

এর আগে অভ্যুত্থানে সমর্থনকারী কয়েক শ মানুষ নাইজারের পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন ও অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সেনাদের সমর্থন জানান। এ সময় বিক্ষোভকারীদের রাশিয়ার পতাকা ওড়াতে দেখা যায়। অনেকে ফ্রান্সবিরোধী স্লোগান দেন। অনেকের হাতে ‘বিদেশি ঘাঁটি সরিয়ে নাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।

২৬ জুলাই মোহাম্মদ বাজোমকে রাজধানী নিয়ামেইয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বন্দী করা হয়। নাইজারের প্রেসিডেন্ট গার্ডের সদস্যরা তাঁকে বন্দী করেন। এরপর নাইজারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে নাইজারের একদল সেনা কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

টিভির পর্দায় কর্নেল-মেজর আমাদোউ আবদ্রামানে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান অব্যবস্থাপনার জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ক্ষমতার পালাবদলের টালমাটাল পরিস্থিতিতে নাইজারে সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে। সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বলা হয়েছে, দেশের সব ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের’ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে।

অভ্যুত্থানের সমালোচনা করে মোহাম্মদ বাজোমের অবিলম্বে মুক্তি চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। মোহাম্মদ বাজোমের মুক্তি চেয়েছে রাশিয়াও।

বছর দুয়েক আগে নির্বাচনে জিতে নাইজারের গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মোহাম্মদ বাজোম। তিনি পশ্চিমাপন্থী হিসেবে পরিচিত। নাইজারের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে জিহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াই এগিয়ে নিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এবং একসময় নাইজারে উপনিবেশ স্থাপন করা ফ্রান্স তাঁকে সরাসরি সহায়তা করে। কেননা, ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ নাইজারে দেশ দুটির সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

নাইজারে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন দেশটির সেনা কর্মকর্তারা। এদিকে নাইজারের অভ্যুত্থানকারী সেনাদের প্রতি নিজের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদু সিদিকু ইসা। তবে অভ্যুত্থান ও মোহাম্মদ বাজোমের পদচ্যুতির পর নাইজারের রাষ্ট্রপ্রধানের পদে কে বসবেন, তা এখনো জানা যায়নি। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন