নানা সমস্যায় জর্জরিত বাইশারী শাহ্ নুরুদ্দীন দাখিল মাদ্রাসা
বাইশারী প্রতিনিধি:
পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী রাবার শিল্প নগরী হিসাবে পরিচিত হলেও এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো নানা সমস্যায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। বিশেষ করে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাইশারী শাহ্ নুরুদ্দীন দাখিল মাদ্রাসাটি দীর্ঘ দিন যাবৎ নানা সমস্যায় জর্জরিত।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও এখন পর্যন্ত পাচ্ছেনা সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি বছর এবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ পাশ করার পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া মাদ্রাসাটি বিগত বছর গুলোতে জেলা–উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
সরজমিনে গিয়ে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা নুরুল হাকিমের সাথে কথোপকথনের এক পর্যায়ে তিনি দীর্ঘ নি:শ্বাস ছেড়ে বলেন, সরকারিভাবে মাদ্রাসায় কোন ধরণের বেতন ভাতা না পাওয়ার পরও আল্লাহ্র উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে ১৫জন শিক্ষক–শিক্ষিকা মাদ্রাসাটিতে পাঠদান করছেন। শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন থেকে কোন রকমে শিক্ষক–শিক্ষিকাদের ভাতা প্রদান করা হলেও বাকি থেকে যায় অনেক মাস।
মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক মাওলানা আব্দুল গফুর বলেন, আশায় বুক বেঁধে আছি কখন মাদ্রাসাটি এমপিও ভূক্ত হবে। সেই আশায় সকলেই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন বলে একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়।
বাইশারীর একমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে চারশত এর বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। শিশু থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অত্র মাদ্রাসায় পাঠদান দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির পাঁচটি ভবনের মধ্যে চারটি ভবনই ঝুকিপূর্ণ অবস্থা। এর মধ্যে দুইটি টিনসেট বাঁশের বেড়া ও দুইটি টিনসেট দালান। উক্ত ভবন গুলো যেকোন মুহূর্তে ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাছাড়া ক্লাস রুমেরও রয়েছে সংকট। শ্রেণিকক্ষে বসার স্থানসহ ফার্নিচারের যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে বলে জানানা শিক্ষকরা। তারা আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ পানিও জলের সংকট ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পয়:নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই। একটি মাত্র নলকূপ রয়েছে তাও মাঝে মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রশিদ বলেন, শিক্ষক সংকট, শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা, বসার স্থান, শ্রেণিকক্ষ, ফার্নিচার সমস্যা, ভবন ঝুকিপূর্ণসহ সরকারিভাবে এমপিও ভূক্ত না হওয়ায় দীর্ঘ ২৪ বছর শিক্ষক–শিক্ষিকাগণ সামান্য বেতন নিয়ে মাদ্রাসাটিতে পাঠদান করে আসছেন। সব মিলিয়ে দেখা যায় মাদ্রাসাটিতে সমস্যার কোন শেষ নাই।
স্থানীয় অভিভাবক ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা আগামীতে মাদ্রাসাটি এমপিও ভূক্তিসহ সমস্যা সমাধানের জন্য বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।