নানিয়ারচরে অবৈধ করাতকলে বন উজাড়

fec-image

রাঙামাটির নানিয়ারচরে অনুমোদনহীন করাতকলে উজাড় হচ্ছে বন। দিন-রাত এসব স’মিলে হাজার হাজার ঘনফুট গাছ চেরাই হচ্ছে। দিনে ও রাতের আধারে এসব চেরাইকলে গোল গাছ হয়ে যাচ্ছে ফার্নিচার কাঠ। এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অনিবন্ধিত এসব করাত কল কাঁঠাল, জাম, গামার, সেগুন, চামালিশসহ বেশ নামি দামি কাঠ চেরাই করে চলেছে। হাতের নাগালেই চেরাইকল। ফলে স্থানীয়রা সামান্য প্রয়োজনে অপরিপক্ব অবস্থায় বিক্রি করছে ফলদার ও ছায়াবৃত এসব গাছ।

বন বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানিয়ারচরে বেশকটি করাতকল নিবন্ধনের আবেদন রয়েছে। তবে নিবন্ধিত আছে একটি মাত্র করাতকল। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাতকল ব্যবসায়ী জানায় ১০-১২টি করাতকলের একটিরও নেই অনুমোদন।

নানিয়ারচর করাতকল মালিক সমিতির সভাপতি রুবেল এর নিকত নিবন্ধিত করাতকলের সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নানিয়ারচরে ১৩টি করাতকল রয়েছে। এর মধ্যে ৭-৮টি চেরাইকল চলমান আছে। বাকিগুলো বন্ধ। তিনি আরো বলেন, আমার স’মিলের অনুমোদন আছে। বাকিগুলো সম্পর্কে আমি জানিনা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, যত্রতত্র গড়ে উঠছে এসব অবৈধ স্থাপনা। এতে হুমকির মুখে এ অঞ্চলের বনভূমি। রাতের আধারে জ্বীপ ও মিনি ট্রাকে করে স’মিলে গাছ পৌঁছায়। পরে নিমিষেই চেরাই হয়ে যায় এসব গোল কাঠ। এ বিষয়ে বন বিভাগের নজরদারি দরকার। বন আইন ও করাতকল বিধিমালা উপেক্ষা করেই প্রতিনিয়ত এসব করাতকল পরিচালিত হচ্ছে। এতে বনভূমি ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। জীববৈচিত্র্য পড়ছে হুমকির মুখে।

এবিষয়ে স্থানীয় শহিবুল ইসলাম বলেন, অবৈধ এসব স’মিলের ফলে সরকার কোন রাজস্ব আয় পাচ্ছেনা। কোন নির্দেশনা না থাকায় এসব চেরাইকলে বন এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় এমন গাছ ও চেরাই হচ্ছে। এসব চেরাইকলসমূহে নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলে বনভূমি এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলুর রহমান বলেন, নানিয়ারচরে অবৈধ করাতকলের বিষয়ে বন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

অশ্রেণিভুক্ত বনাঞ্চল বনীকরণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ.ন.ম আব্দুল ওয়াদুদ জানান, এই ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। অবৈধ এসব করাতকল বন্ধে শীঘ্রই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন