নির্বাচনকে ঘিরে খাগড়াছড়িতে আইন শৃংখলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

Untitled-1 copy

জেলা প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি :

১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন খাগড়াছড়ি জেলায় ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাতায়াত, সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি ও ভোট অবাধ করার লক্ষে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে খাগড়াছড়িতে আজ শনিবার সকাল ১০টায় জেলার পেশাগত সাংবাদিকদের নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন হল রুমে জেলা পুলিশ সুপার শেখ মো: মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মাসুদ করিম। এছাড়াও মত বিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জয়নাল আবেদীন, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মো: আবু দাউদ, ৮টি উপজেলার বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দসহ পেশাগত সাংবাদিকবৃন্দ।

মতবিনিময় সভায় পুলিশ কর্মকর্তা ও পেশাগত সাংবাদিকবৃন্দ খাগড়াছড়ি আসনে ৫জানুয়ারী ১৮১টি কেন্দ্রে অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন এবং ভোট পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। সভায় পুলিশ সুপার জানান, ৪জানুয়ারী সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক সকল ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার পুলিশী সহায়তায় নির্বাচনের মালামাল নিয়ে রাত্রি যাপন করবেন এবং পুলিশ সদস্য ভোট কেন্দ্র এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিবেন। ৫জানুয়ারী সকাল ৮টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।

তাছাড়া জেলার মোট ১৮১ কেন্দ্রকে ২ ভাগে বিভক্ত করে জেলা প্রশাসন কর্ম পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন বলে জানান। ১৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি কেন্দ্র সাধারণ কেন্দ্র ও ১৫৯টি কেন্দ্রকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ১৫-১৬জন পুলিশ সদস্যসহ আনসার ভিডিপি সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিবেন। তাছাড়া প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে ৫ তারিখের পূর্বে স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার ভোট কেন্দ্র ও কেন্দ্রের আশ-পাশের এলাকার রাস্তাঘাট পর্যবেক্ষণ করে পরিকল্পনা গ্রহণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ৩টি কেন্দ্রে ও দীঘিনালা উপজেলার ১টি সেনাবাহিনী দ্বারা নির্বাচনী মালামাল বহন করা হবে বলে জানান।

প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রের জেলা প্রশাসন কর্তৃক ভোটারদের সুবিধার্থে বাঁশ দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্ঠনি তৈরী করা হবে এবং পুরুষ-মহিলা ২টি সারি বিভক্ত করা হবে। তাছাড়া ভোট কেন্দ্রের ৪শ গজ দুরুত্বে সকল প্রকার দোকানপাট বন্ধ করে দেয়াসহ জেলার সকল পাম্পগুলোতে খোলা তৈল বিক্রি বন্ধে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। এছাড়াও নির্বিঘ্নে ভোট পরিচালনার জন্য সেনা টহল, র‌্যাব, একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে বিজিবি টহল অব্যাহত থাকবে। প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্র এলাকায় ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যে কোন প্রকার নাশকতা এড়ানোর জন্য সকল ওয়ার্ক টীমের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক জানান, ভোটের দিন সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। শুধুমাত্র প্রশাসনিক গাড়ী চলবে ও অনুমোদনকৃত সাংবাদিকদের পরিবহণের অনুমতি প্রদান করা হবে। এছাড়াও নির্বাচনের স্বার্থে জেলার ৩টি পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ হেডম্যান, কার্বারীদের সমন্বয় করে এ কার্যক্রম চলবে। জেলার সবকটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের পূর্বে ও পরবর্তী ১৫ তারিখ পর্যন্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। বিশেষ করে, বন বিভাগের, সওজ ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকবলদের এ নির্বাচনে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার আহবান জানানো হয়।

মতবিনিময় সভায় উল্লেখ করা হয়, কোন প্রিজাইডিং অফিসার ভোট গণনা শেষে নিজ আত্নীয়ের বাড়িতে রাত্রি যাপন করতে পারবে না। ব্যালট পেপার সংরক্ষণ করে পুলিশী সহায়তায় জেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবর ব্যালট জমা প্রদান করবেন। কোন প্রিজাইডিং অফিসার আইন পরিপন্থী কোন কাজ করলে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়। তবে পুলিশ কখনও কোন ভোটারদের ভোট প্রদানের জন্য উৎসাহ দিতে পারবেন না বলে সভায় তাগিদ দেওয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন