পানছড়ির মডেল কেয়ারটেকারের খুঁটির জোর কোথায়?

শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশানের বিতর্কিত মডেল কেয়ারটেকার সাব্বির মাহামুদ ১৫ আগস্টের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে জন্ম দিয়েছে আরো একটি বিতর্কের। ইসলামিক ফাউন্ডেশানের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশান সারা দেশ ব্যাপী উপজেলা, জেলা ও বিভাগ ভিত্তিক আলোচনা সভা, কোরআনখানি, আমদ-না’থ, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তা-চেতনা, জীবনের দিক সম্পর্কে বিশিষ্ট আলেম, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ গ্রহণ করে থাকে।

কিন্তু ভূয়া কাগজ-পত্র দাখিল করে স্থায়ী বাসিন্দাদের বঞ্চিত করা বিতর্কিত পানছড়ির মডেল কেয়ারটেকার সাব্বির মাহামুদ ১৫ আগস্টের আগেই পানছড়ি ত্যাগ করে। তাই পানছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানের সাথে জড়িত ইমাম-মোয়াজ্জেম ও রাজনৈতিক নেতাদের একটাই প্রশ্ন এই বিতর্কিত সাব্বির মাহামুদের খুঁটির জোর কোথায় ?

মডেল কেয়ারটেকারের অনুপস্থিতির ব্যাপারে ১৫আগস্ট পানছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানে অতিথি হয়ে খাগড়াছড়ি থেকে আসা মাস্টার ট্রেইনার মো: হাবিবুর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সাব্বির মাহামুদ উপ-পরিচালক থেকে ছুটি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ঢাকা গেছে।

কোন তারিখ থেকে ছুটি নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ১৬আগস্ট থেকে তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, সাব্বির মাহামুদ ১৪আগস্ট থেকেই পানছড়িতে নেই। এ সময় উপস্থিত থাকা পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: বাহার মিয়াও এ গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে তার অনুপস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ইমাম-মোয়াজ্জেম জানান, সে উপস্থিত থাকবে না এটা পূর্বপরিকল্পিত। তাছাড়া পানছড়িতে ইমামদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি করে দূরত্ব সৃষ্টির জন্য সাব্বির মাহামুদকেই দায়ী করছেন সবাই।

গত ১৪-১-২০১৫ ইং তারিখের দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলীকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অত্র এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও ভূয়া কাগজ-পত্র দাখিল করে নিয়োগ পাওয়া মডেল কেয়ারটেকার সাব্বির মাহামুদ নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের মইজদিপুর গ্রামের মাওলানা হোসাইন আহম্মদের ছেলে। ৪ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সাব্বির মাহামুদ লেখাপড়া করেন ভারতের দেওবন দারুল উলুম মাদ্রাসায়।

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলায় বিয়ে করার পর তিনি প্রথমে মহালছড়ি তারপর দীঘিনালার জামতলী, পরে পানছড়ির লোগাং ও সর্বশেষ পানছড়ির সাবেক এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ডান-বাম বুঝিয়ে ২১ বছর যাবৎ উপজেলা মসজিদে চাকুরিরত ইমাম মাওলানা মো: হানিফকে হটিয়ে আসনটি নিজ আয়ত্বে নেয়। এরি মাঝে সে তার সরকার দলীয় আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে পানছড়ি’র সরকার দলীয় নেতাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

পানছড়ির অভিজ্ঞ মহল বলছে, সাব্বির মাহমুদের খুঁটির জোর বেশ শক্ত। হয়তো ইসলামিক ফাউন্ডেশানের বড় কোন কর্মকর্তার সাথে তার গোপন যোগসাজস রয়েছে। না হয় পত্র-পত্রিকায় এত লেখা-লেখি সত্বেও এসব অপকর্মের জন্য তাকে আইনের কাঠগড়ায় না তোলে আজো মডেল কেয়ারটেকার পদে বহাল রাখার মানেটা কি?

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন