প্রশাসন শ্রমিক দিয়ে মাটি খুড়ে পানির গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা

পানি কমে যাওয়ায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌপথে দুর্ভোগ চরমে

fec-image

শুষ্ক মৌসুমে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পানি কমে যাওয়ায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌ পথে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যাত্রীরা মাঝপথে আটকে গিয়ে সীমাহীন সঙ্কটে পড়ছে। যাত্রীরা হাটু সমান পানিতে নেমে আটকে যাওয়া বোট নিয়ে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবীরা এ সঙ্কটের ফলে মাঝপথে আটকে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি থেকে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কি. মি.। নৌ পথে পানির স্তর অধিক নীচে নেমে যাওয়ায় যাত্রীদের বোট থেকে নামিয়ে দিয়ে টেনে টেনে চালাতে হচ্ছে।

যাত্রী শহীদ ও বোট চালক নয়ন জানান, জানুয়ারি থেতে মে মাস পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে হ্রদের পানি কমে গিয়ে চলাচলে চরম সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর কোন চিরস্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয় না। যার ফলে বছরঘুরে এলে এ ধরনের সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হয়।

বুধবার (১৯এপ্রিল) সকালে গিয়ে দেখা যায় কেড়ানছড়ি শতাধিক পাহাড়ি, বাঙালি নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাপ্তাই লেক থেকে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আবার অনেক শ্রমিক নৌ চলাচলে সহযোগিতা করছেন।

তাদের একজন গোপাল দাশ জানান, সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় আমরা সকাল থেকে এই কেরনছড়ি এলাকায় লেক থেকে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

মহিলা শ্রমিক আনোয়ার বেগম এবং অমর কান্তি চাকমা ও সোনারাম চাকমা জানান, আমরা বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে লেকের যে অংশে পানি কমে গেছে সেই অংশে মাটি তোলার কাজ করছি।

১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, এই মৌসুমে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি ও রাঙামাটি নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন। তাই ৪০ দিনের কর্মসূচি সৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে কাপ্তাই লেকের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেখানে শ্রমিক দিয়ে লেক থেকে মাটি অপসারণের মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেইখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয় নি।

বিলাইছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দিন জানান, কেরনছড়ি ঐ এলাকায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচিতে সর্বমোট ১৬৮ জন শ্রমিক কাজ করে প্রানান্তকর চেষ্টা করছেন যাতে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এই কাজে সংশ্লিষ্ট সাধারণ মানুষ, শ্রমিক ও জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই দু:সাধ্য কাজ সাধিত হচ্ছে। এজন্য আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাপ্তাই, দুর্ভোগ, নৌপথ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন