প্রজ্ঞাপন জারী করে জুম্ম জনগণের মন থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দটি বিলুপ্তি করা যাবে না : ঊষাতন তালুকদার
স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি :
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের নামে সরকারের তাল বাহানা জুম্মজাতি আর মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ার দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয়সহ সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার।
তিনি বলেন, রাঙামাটিতে বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল ও মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না। বরং এসব করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। সরকার উন্নয়নের নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের করে জুম্ম উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে। যে উন্নয়ন জুম্ম জনগণের বিপক্ষে সে উন্নয়ন আমরা চাই না। তাছাড়া শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না করলে সরকারের যে কোন চুক্তি বিরোধী উন্নয়ন কার্যক্রম জুম্ম জনগণ প্রতিহত করবে। তিনি অবিলম্বে সংবিধানে জুম্ম জনগনকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবী জানান।
‘আদিবাসী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মুক্তিকামী জনতার সেতুবন্ধ’ স্লোগানকে সামনে রেখে শনিবার সকাল ৯টায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরে আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির আয়োজনে র্যালী পুর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির হিসেবে ঊষাতন তালুকদার এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম’ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন, এম এন লারমা ফাউন্ডেশনের আহবায়ক বিজয় কেতন চাকমা, জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি গুনেন্দু বিকাশ চাকমা, রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা, বিলাইছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শ্যামা চাকমা ও বালুখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় গিরি চাকমা।
উষাতন তালুকদার এমপি বলেন, সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয় কিছুদিন আগে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলকে ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার না করতে বলা হয়। প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে জুম্ম জনগণের মন থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দটি বিলুপ্তি করা যাবে না। বার বার সরকার জুম্ম জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। জুম্ম জনগনকে অন্ধকারে রেখে সরকার মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন পাশ করেছে। এখন আবার সরকার পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন সংশোধনের চেষ্টা করছে। সরকারের একের পর এক চুক্তি বিরোধী কার্যক্রম জনগনকে প্রতিহত করবে জুম্মজাতি।
পরে বেলা ১২টার দিকে রাঙামাটির পৌরসভা চত্ত্বরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয়সহ সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার আদিবাসী র্যালী উদ্বোধন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির ঐতিহ্যবাহী নিজ নিজ পোষাকে সেজে র্যালীতে অংশগ্রহণ করে। শত শত নর-নারীর বিশাল বর্ণাঢ্য র্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা বটমুলে গিয়ে শেষ হয়।