পার্বত্য বাঙালি সংগঠনগুলো একীভূত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের আত্মপ্রকাশ

fec-image

পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি সংগঠনগুলো বিলুপ্ত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নামের একটি সংগঠন আত্নপ্রকাশ করেছে। এ সময় এ সংগঠনের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ নামের দুটি সংগঠনের নাম ঘোষণা করা হয়।

এই সংগঠনগুলো শুধুমাত্র বাঙালিদের নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সকল নিপীড়িত মানুষের অংশগ্রহণের দ্বারও উন্মোচন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সংগঠনটির নেতারা।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন নতুন সংগঠনের পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রেখে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক ‘পার্বত্য চুক্তি’ সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী শান্তিবাহিনী আত্নসমর্পন করলেও কিছু অস্ত্র জমা দিয়ে তাদের সশস্ত্র তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। চাঁদাবাজির টাকায় তাদের অস্ত্রের ভাণ্ডার দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হয়েছে। আর এই চাঁদাবাজির টাকার লোভে জনসংহতি সমিতি ভেঙ্গে একের পর এক মোট চারটি উপজাতীয় আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম হয়েছে। যার ফলে পার্বত্য চুক্তির কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না পার্বত্যবাসী।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, পাহাড়ের চারটি সশস্ত্র সংগঠন একদিকে যেমন চাঁদাবাজি ও রাহাজানির মাধ্যমে জনজীবন বিপন্ন করে তুলেছে, অন্যদিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্ধে প্রায়ই তারা নিজেরাই সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন ও সম্পদের হানি ঘটিয়ে পাহাড়ের পরিবেশ আরো ঘোলাটে করে তুলছে। তাদের আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবেই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙালি কেউ সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন থেকে রেহাই পাচ্ছেনা। একটি বিশেষ গোত্র ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ আজ এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিনিয়তই সবুজ পাহাড়ে রক্ত ঝরছে। কখনও বাঙালিদের আবার কখনওবা পাহাড়িদের। খুনের পাশাপাশি পাহাড়ের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্প ও কৃষি খাত স্থবির হয়ে রয়েছে চাঁদাবাজির যাতাকলে। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও উপজাতীয়দের মধ্যে সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি করে এবং উপজাতীয়দের বিপন্নতা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর জাতীয় ইস্যুতে বিদেশী শক্তিকে জড়ানো হচ্ছে বলে সকল আলামত স্পষ্ট।

এ সময় পাহাড়ি-বাঙালি ভেদাভেদ ভুলে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয়।

বাঘাইছড়ির সাবেক পৌর মেয়র আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে নতুন সংগঠনের স্টিয়ারিং কমিটির মধ্য থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মুজিবুর রহমান, সম অধিকারের সাবেক মহাসচিব মো: মনিরুজ্জামান মনির, পার্বত্য গণ পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো: পারভেজ তালুকদার, পার্বত্য অধিকার ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএম মাসুম রানা, অধ্যক্ষ আবু তাহের, আবদুল হামিদ রানা, শেখ আহমেদ রাজু, মো. আবদুল কাইয়ুম, সাংবাদিক মো. সোলাইমান, শেখ আহমেদ রাজু, সাব্বির আহমেদ, সালমা আহমেদ মৌ, শাহাদাত ফরাজী সাকিব, হাবিবুর রহমান, লোকমান হোসেন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, প্রধানমন্ত্রী, প্রেসক্লাব
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন