লংগদুতে ৩৫কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ড দিবস : গণকবর জিয়ারত, শোক র‌্যালি ও আলোচনা সভা

fec-image

নয় সেপ্টেম্বর, পার্বত্য এলাকার বাঙালিদের কাছে এদিনটি পাকুয়াখালী ট্রাজেডি তথা ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ড দিবস। ১৯৯৬ সালের এই দিনে পার্বত্য রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী পাকুয়াখালী নামক গহীন অরণ্যে তৎকালীন শান্তি বাহিনী তথা জে এস এস এর সশস্ত্র গ্রুপের হাতে প্রাণ হারায় ৩৫ নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়া। সেই থেকে পার্বত্য এলাকায় বাঙালিরা এ দিনটিকে পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

প্রায় দুইযুগ হয়ে গেলেও এখনও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ২৪ বছর পরেও বিচার না পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত নিহতদের পরিবার।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে দিবসটি পালন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঙালী নাগরিক পরিষদ ও অংগ-সংগঠন।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর), লংগদু উপজেলায় নিহত কাঠুরিয়াদের গণকবর জিয়ারত, শোক র‌্যালি এবং দোয়া ও আলোচনা সভা করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ খলিলুর রহমান খান এর সভাপতিত্বে এবং রাঙামাটি জেলার যুগ্ন সাম্পাদক এবিএস মামুন এর পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সাম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলর ইঞ্জিয়ার আব্দুল মজিদ।

প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলার সিঃ সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সাম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলর এসএম মাসুম রানা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সহসভাপতি রাঙামাটি জেলা ও বাঘাইছড়ি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, সহসভাপতি রাঙামাটি জেলার কাজী মোঃ জালোয়া, সাধারণ সম্পাদক খাগড়াছড়ি জোলা ইঞ্জিয়ার মোঃ লোকমান হোসেন, স্বজন হারাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, মোঃ রাকিব হোসেন ও ছাত্র নেতা মোঃ আসাদুল্লাহ।

এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুব
বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মাসুদ, রাঙামাটি জেলা ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দগন উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, ৩৫ কাঠুরিয়া নিহত পরিবারকে অনতিবিলম্বে পুনঃবাসন করে তাদের মাসিক রেশন প্রদানের মাধ্য সহযোগিতা করা এবং তাদের সন্তান সন্ততীকে সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।

বক্তারা আরো বলেন, কাঠুরিয়া হত্যাকারী শান্তিবাহিনী (জেএসএস
এর সশস্ত্র ক্যডার) দের দ্রুত বিচারের মুখোমুখী করে দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির দাবি জানান।

উল্লেখ্যঃ ১৯৯৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর শান্তিবাহিনী লংগদুর ৩৬ জন
কাঠুরিয়াকে ব্যবসায়িক লেনদেনের কথা বলে পাকুয়াখালী নামক গহীন অরণ্যে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে কাঠুরিয়াদের তিন দিন আটকে রেখে হাত-পা ও চোখ বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে ৯ সেপ্টেম্বর হত্যা করা হয়।

আটক ৩৬ জন কাঠুরিয়ার মধ্যে ইউনুস নামের একজন কাঠুরিয়া
পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। সে খবর দিলে ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ ও সেনাবাহিনী পাকুয়াখালীর জঙ্গল হতে ২৮ জন কাঠুরিয়ার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। বাকি ৭ জন কাঠুরিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ড দিবস, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন