রাঙ্গামাটিতে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ' এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন

‘পাহাড়ে বাঙালিরা সন্ত্রাসীদের টার্গেট, পাহাড়িরা বলির পাঁঠা’

fec-image

পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত বাঙালি জনগোষ্ঠী হলো সন্ত্রাসীদের টার্গেট আর পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষ বলির পাঁঠা। গোষ্ঠীভেদে নির্যাতনের মাত্রা কমবেশী হলেও একটি বিশেষ গোত্র ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানুষ সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত নিপীড়িত ও বঞ্চিত সকল মানুষের স্বার্থ রক্ষায় নবগঠিত সংগঠন ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী শান্তিবাহিনীরা আত্মসমর্পণ করলেও কিছু অস্ত্র জমা দিয়ে তাদের সশস্ত্র তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে এবং চাঁদাবাজির টাকায় তাদের অস্ত্রের ভাণ্ডার দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। আর এই চাঁদাবাজির টাকার লোভে জনসংহতি সমিতি ভেঙ্গে একের পর এক মোট চারটি উপজাতীয় আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম হয়েছে। যার ফলে পার্বত্য চুক্তির কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছে না পার্বত্যবাসী। পাহাড়ের এই চারটি সশস্ত্র সংগঠন এখন একদিকে যেমন চাঁদাবাজি ও রাহাজানির মাধ্যমে জনজীবন বিপন্ন করে তুলেছে, অন্যদিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে প্রায়ই তারা নিজেরাই সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন ও সম্পদের হানি ঘটিয়ে পাহাড়ের পরিবেশ ঘোলাটে করে তুলছে। তাদের আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবেই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙালি কেউ সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রতিনিয়তই সবুজ পাহাড়ে রক্ত ঝরছে। কখনও বাঙালিদের আবার কখনও বা পাহাড়িদের। খুনের পাশাপাশি পাহাড়ের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্প ও কৃষি খাত স্থবির হয়ে রয়েছে চাঁদাবাজির যাতাকলে। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও উপজাতীয়দের মধ্যে সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি করে এবং উপজাতীয়দের বিপন্নতা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভুতি অর্জনের মাধ্যমে (অশুভ উদ্দেশ্যে) বাংলাদেশের স্পর্শকাতর জাতীয় ইস্যুতে বিদেশী শক্তিকে জড়ানো হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত বাঙালির সকল সংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ” নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ এর যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আলমগীর কবির, সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, পারভেজ তালুকদার, মোহাম্মদ সোলায়মান, মোঃ শাহজাহান আলম, মোঃ সাব্বির আহমেদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে নবগঠিত সংগঠনকে স্বাগত জানিয়ে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ হতে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি, পার্বত্য
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন