পাহাড়ে হরতালের প্রথমদিন শান্তিপূর্ণভাবে পালিত: বাড়লো আরো একদিন

13925415_1159229424135670_6136833996237383328_n

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৬ বাতিলের দাবিতে বুধবার খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় শান্তিপুর্ণভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনের পর হরতাল একদিন বাড়িয়ে বৃহস্পতিবারও হরতালের ডাক দিয়েছে হরতাল সমর্থক পাঁচ বাঙ্গালী সংগঠন। পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৬ অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রতিবাদে একদিনের হরতালকে বাড়িয়ে দুইদিন করার ঘোষণা দেয়া হয়। ফলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলবে হরতাল।

এদিকে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে স্থবির হয়ে পড়ে তিন পাহাড়ী জেলার কর্মকাণ্ড। হরতালের ফলে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়ে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। হরতালের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশকোচগুলো সকালের দিকে পুলিশী পাহারায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরে প্রবেশ করলেও জেলা সদর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দুরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। অভ্যন্তরীণ সড়কেও কোন যানবাহন ছেড়ে যায়নি। হরতালকে ঘিরে সকাল থেকেই খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। হরতালের কারণে সরকারী-বেসরকারী অফিস আদালত খোলা থাকলেও উপস্থিতি ছিল নগন্য। হরতালের সমর্থনে জেলাসদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় শান্তিপুূর্ণভাবে পিকেটিং করেছে হরতাল সমর্থকরা।

পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভুইয়া হরতাল বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকার একপেশে এ সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে আরো কঠোর কর্মসুচী দেয়া হবে। তিনি বলেন, যে আইন বাঙ্গালীদের ভুমির অধিকার হরণ করবে সে আইনের বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবেনা।

এদিকে হরতাল চলাকালে জেলার কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জেলা ও উপজেলার গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল চোখে পড়ার মতো। যেকোন ধরনের নাশকতা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য যে, গত ১ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে ‘পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। যে আইনে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা খর্ব করা হয়। ‘পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’ অনুমোদনের পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে আসছে। সংসদ অধিবেশন না থাকায় মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের পর জরুরী বিবেচনায় মঙ্গলবার (০৯ আগষ্ট) আইনটির অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন