পেকুয়ার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে টিউবঅয়েল আত্মসাতের অভিযোগ

পেকুয়া প্রতিনিধি :

চকরিয়া পেকুয়ার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত টিউবঅয়েল সংশ্লিষ্ট স্থান বা প্রতিষ্ঠানে না বসিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে বঞ্চিতরা সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সরকারের গ্রামীণ বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় এমপি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পাড়া, মহল্লা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও মসজিদ মন্দিরে গভীর ও অগভীর টিউবঅয়েল বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রতিটি গভীর টিউবঅয়েলের জন্য যেকোন সরকারী ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা ও অগভীর টিউবঅয়েলের জন্য ৪ হাজার টাকা জমা দিলে টিউবঅয়েল স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ঠিকাদার নিয়োগ করে এ টিউবঅয়েলগুলো স্থাপন করে থাকে।

অভিযোগ হচ্ছে, ২০১২ সালে সংসদ সদস্যের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত টিউবঅয়েল স্থাপনের জন্য যাবতীয় পক্রিয়া শেষ করা হলেও দীর্ঘ ৪ বছরেও ওই টিউবঅয়েল স্থাপন না করে ওই অধিদপ্তরের চকরিয়া উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী  (পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত) কামাল হোসেন আত্মসাত করেছেন। তাই দীর্ঘদিন ধরে অধিদপ্তরে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগীরা। একইভাবে তারা দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান অভিযোগ কারীরা।

জানা যায়, ২০১৩ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য এডভোকেট হাসিনা আহমদ চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় সরকারীভাবে প্রাপ্ত শতাধিক টিউবঅয়েল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, মসজিদ মন্দিরে বিভাজন করে ওই বছরের ৮ জানুয়ার কক্সবাজার নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে একটি ডিও লেটার প্রদান করেন। (যার প্রকল্প পরিচালক স্বারক নং প্রকল্প পরিচালক জ,.স্বা. প্র. অ বিশেষ গ্রামীণ পানি সরবরাহ প্রকল্প ঢাকা এর দপ্তরীয় স্বারক নং ১৪৭/৬৪ তারিখ : ২২-০৮-২০১২ ইং। স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্তের স্বারক নং ৪০৩/৮ তারিখ : ০৩-০৯-২০১২ ইং, নির্বাহী প্রকৌশলী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর কার্যালয়ের স্বারক নং জ. স্বা. প্র. অ/কক্স/৫১৬/৮ তারিখ: ১০-০৯-২০১২ ইং।) কিন্তু বরাদ্দকৃত ওই টিউবঅয়েলের অধিকাংশ স্থাপন না করে আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই বরাদ্দে উজানটিয়া এএস সিনিয়র মাদ্রাসার নামে একটি গভীর টিউবঅয়েল বরাদ্দ দেয়া হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী সরকারী ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে অফিসের সাথে যোগাযোগ করলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন ঠিকাদার পাঠিয়ে মাদ্রাসা অফিস থেকে আরো ১ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। কিন্তু অদ্যাবদি ওই টিউবঅয়েলটি না বসিয়ে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মীর মোশারফ হোসেন টিটু। তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ বছর ধরে জনস্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন অফিসে ধর্না দিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় লিখিত অভিযোগ করলাম। এতেও কাজ না হলে মামলা করবেন বলে জানান এই আইনজীবি।

এ বিষয়ে তৎকালীন এমপি হাসিনা আহমদের সংসদীয় অফিসের সহকারী কো অর্ডিনেটর এম আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে দেয়া ওই বরাদ্দের তদারকি করার মতো সময় এমপি মহোদয়রা পাননি। বরাদ্দ দেয়ার কিছুদিনের মধ্যে সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় এবং দেশের পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যায়। এ সুযোগে হয়ত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা টিউবঅয়েলের অর্থ আত্মসাত করে ফেলেছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ এতদিন অভিযোগ না করায় বিষয়টি সবার অগোচরে রয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন