পেকুয়ায় নিষিদ্ধ পলিথিনের রমরমা ব্যবসা, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারসহ সবকয়টি বাজারে চলছে নিষিদ্ধ পলিথিনের রমরমা ব্যবসা। ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০০২ সালে প্রণীত আইন অনুযায়ী পলিথিন সামগ্রী উৎপাদন, বিপণন, বিক্রি, বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুত, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। এ আইন অমান্য করলে এক থেকে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

এ পলিথিন ব্যাগ বিক্রি নিষিদ্ধ করলেও পেকুয়া বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এ আদেশ অমান্য করে যাচ্ছেন। তারা সরকারি আইনকে অমান্য করে দেদারসে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

পেকুয়া বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, পেকুয়া বাজারের বেশ কিছু ব্যবসায়ী এ ব্যবসা গোপনে চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা চট্টগ্রাম থেকে পলিথিন এনে গোডাউনে জমা রাখে। পরে দোকানে অল্প অল্প নিয়ে বাজারে ও দোকানদারদের মাঝে বিক্রি করে। ফলে দূষিত হচ্ছে পানির তলদেশ, উর্বরতা হারাচ্ছে মাটি। ভরাট হচ্ছে নদীনালা, খালবিল। অতিমাত্রায় পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে মানব শরীরে বাসা বাঁধছে মরণ ব্যধিক্যান্সারসহ নানা রোগ।

এদিকে পরিবেশবাদীরা বলেছেন, অনেক দেশে আইন করে পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে স্থলের পর এবার সাগর, মহাসাগরকে মিশিয়ে তুলছে বিষাক্ত পলিথিন ও প্লাস্টিক। তারপরও সচেতনতা বাড়ছে না। মানুষ, প্রাণী, পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তারা আরও বলছেন, পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার পরও পেকুয়াসহ সারা দেশে চলছে রমরমা ব্যবসা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনেই সারাদেশে পলিথিন ব্যবহার চলছে। ছোট্ট পণ্য থেকে শুরু করে বড় পণ্য সবকিছুই বিক্রেতারা পলিথিনের ব্যাগে করে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে চর্মরোগ, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। এদিকে পেকুয়ায় মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হলেও তা পলিথিনের ব্যবহার কমাতে পারছে না।

এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবাহান বলেন, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ আইন থাকলেও এর কার্যকারিতা নেই। পলিথিন দূষণ আমাদের ভূমি, নদী-সাগর সব বিষাক্ত করছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার কারণে পলিথিন এখনো অবাধে উৎপন্ন ও বাজারজাত হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, পলিথিনের বিষয়ে পেকুয়া বাজারে ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্ট করে জরিমানা করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনকারীদেরকে ছাড়া দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আবারো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পরিবেশ, পলিথিন, পেকুয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন