বছর ঘুরে আবারো ঈদ-উল-ফিতর আসছে পাহাড়ী জনপদে

ঈদুল ফেতর

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

বছর ঘুরে আবারো মুসলমানদের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে ‘ঈদ-উল-ফিতর’। সেই সাথে শেষ হতে চলেছে এক মাসের সিয়াম-সাধনারও। মুসলমানদের সর্ববৃহত ধর্মীয় উৎসব ‘ঈদ-উল-ফিতর’ উদযাপনে প্রস্তুত পাহাড়ী জেলা খাগড়াছড়ির মানুষ। ধনী-গরীব সবার ঘরেই বাজতে শুরু করেছে আনন্দের ধা-মা-মা। সেই সাথে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অবাড়তি আনন্দ দিতে প্রস্তত জেলার পর্যটন স্পটগুলো। সাথে সাথে ধুয়ে মুছে সাজানো হচ্ছে জেলার আবাসিক হোটেলগুলো।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই প্রতিটি জনপদে বেজে উঠতে পারে ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’। আর এ গানের সুরে মিশে যাবে ধনী-গরীব আর উঁচু-নিচুর সব ভেদাভেদ। সারা বিশ্বের মুসলমানের জন্য ‘ঈদ-উল-ফিতর’ উৎসবের আবশ্যকীয় একটি অংশ।

চিরাচরিত নিয়মে এক মাস সিয়াম-সাধনা শেষে শাওয়াল মাসের বাঁকা চাঁদ নিয়ে সমাগত হয় ‘ঈদ-উল-ফিতর’। বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বে দেশের প্রায় এক দশমাংশ ভূ খন্ড জুড়ে আছে পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি আর বান্দরবান। যেখানে বাংলা ভাষাভাষীদের পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ ছোট ছোট ১৩টি ক্ষদ্র নৃ-গোষ্ঠির বসবাস। চাকমা-মারমা-ত্রিপুরাদের বৈসাবী‘র পাশাপাশি মুসলমানদের ঈদ উৎসব পালনের দৃশ্যপট সমতলের অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন।

‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এ শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে যে কোন উৎসব ভিন্ন আমেজে পালিত হয় পাহাড়ে। এবারও তার ব্যাতিক্রম হবে না। এখানে উৎসব পালনে থাকেনা কোন ভেদাভেদ। উৎসব মানেই আনন্দ আর আনন্দ মানে একে অন্যের বাড়িতে ছুটোছুটি। এখানে ধনী-গরীব, স্বজন-প্রতিবেশী সবাই একাকার হয়ে যায় উৎসব পালনে। এখানে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে শীর্ষ নেতারা পাশাপাশি দাড়িইে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করবেন। তৈরী করবেন শান্তি আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন।

বরাবরের মতোই উৎসবকে সামনে রেখে জেলাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র আবু ইউসুফ চৌধুরী বলেন, এক মাসের সিয়াম সাধনা শেষে ঈদ উৎসব ভাগাভাগি করাটা এ জনপদের ঐতিহ্য। এক মাসের সিয়াম সাধনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এ জনপড়ে ‘ঐক্যের ভীত’ রচনা করবো।

এ উৎসবের মধ্যে দিয়ে পরস্পরের প্রতি ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ঐক্য সৃষ্টি করবো। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ‘র চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কংজরী চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। মুসলিম সম্প্রদায় ছাড়াও ঈদ উৎসবে মেতে ওঠবে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীসহ অন্য সব ধর্ম-বর্ণ, ও সম্প্রদায়ের লোকজন। উৎসব পরিণত হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলন মেলায়। জাতিতে জাতিতে, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে ঘটবে ভালোবাসার মেলবন্ধন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment
আরও পড়ুন