বাঙালিরা এদেশের ‘আদিবাসীদে’র পায়ের তলায় পিষে রেখেছে: পঙ্কজ ভট্রাচার্য

DSCN6502 copyপ্রেস বিজ্ঞপ্তি :

মৌলভীবাজারে খাসিয়া উপজাতি তরুণী হত্যা, ঝিমাই পুঞ্জি দখলের অপচেষ্টা ও দেশব্যাপী উপজাতিদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও কুবরাজ আন্তঃপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে শনিবার ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সাংসদ হাজেরা সুলতানা বলেছেন, ‘আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হয়েও আমাদের একজন আদিবাসী বোনকে হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। তিনি অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।’

মানববন্ধনে সংহতি বক্তব্যে বর্ষীয়ান রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্রাচার্য বলেন, ‘পাঞ্জাবীরা যেমন বাঙালীদের পায়ের নিচে পিষে রেখেছিল ঠিক তেমনি আমরা বাঙালিরাও এদেশের আদিবাসীদের পায়ের তলায় পিষে রেখেছি। এটা ঠিক নয়, এভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রকে আদিবাসীদের স্বীকৃতিসহ আমাদের আদিবাসী মেয়েকে যে হত্যা করা হয়েছে এটাসহ সকল নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে এবং এটার সুষ্ঠ বিচার করতে হবে। আমাদের সবার মিলিত প্রচেষ্টায় খাসিয়া পুঞ্জি দখলের অপচেষ্টা প্রতিরোধ করতে হবে।’

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেছেন, ‘যেখানে বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে প্রণোদনা আনছে দেশের পরিবেশ রক্ষা করার জন্য সেখানে কিভাবে আবার একই সরকার গাছকাটার মতো এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে পারে? আমি মনে করি বাংলাদেশ সরকার এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রকে আদিবাসীদের প্রতি আরো আন্তরিক হতে হবে।’

বিশিষ্ট নাট্যকার মামুনুর রশীদ তার সংহতি বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের ভাষার মাসে আমরা আদিবাসীদের ভাষার স্বীকৃতি তো দিচ্ছিই না বরং উল্টো তাদের উপর বিভিন্ন রকমের নিপীড়ন নির্যাতন চালাচ্ছি। আর তার উজ্জল প্রমাণ আজ আমরা এই রাজপথে দাঁড়িয়ে আমাদের আদিবাসী তরুণী মোনালিসার হত্যার বিচার, খাসিয়া পুঞ্জি দখলের অপচেষ্টা ও আদিবাসীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে বিচার চাইতে হচ্ছে এই স্বাধীন দেশে থেকেও। এ থেকে বড় লজ্জা আমাদের আর কি হতে পারে?’

সংহতি বক্তব্যে বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, ‘আদিবাসীদের যে কোন আন্দোলনে আমরা সাথে আছি। আমরা আগামীতে সেই পুঞ্জি পরিদর্শনে যাবো এবং যা যা করতে হয় আমরা তাই করবো। প্রয়োজনে সেখানকার স্থানীয় জনগণ ও আদিবাসীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।’

উইলিয়ম নকরেকের সঞ্চালনায় প্রতিবাদী মানববন্ধনে আরো সংহতি বক্তব্য রাখেন, আইইডি’র নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খাঁন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, এএলআরডি’র প্রতিনিধি একে এম বুলবুল আহামেদ, আব্দুল আহাদ মিনার, সাধারণ সম্পাদক, ওর্য়ার্কাস পার্টি, মৌলভীবাজার জেলা শাখা, দীপায়ন খীসা, সাবেক ছাত্র নেতা ও সংগঠক হিরন মিত্র চাকমা, চঞ্চণা চাকমা, ছাত্র নেতা অনন্ত বিকাশ ধামাই ও ছাত্র নেতা টুকি চাম্বুগংসহ আরো অনেকে।

মানববন্ধনে আরো সংহতি প্রকাশ করেন, কাপেং ফাউন্ডেশন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ, হিউমেন রাইটস ডিফেন্ডারস, গারো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (গাসু), বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) ও বাংলাদেশ কাথলিক স্টুডেন্টস মুভমেন্ট (বিসিএসএম)।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন