বান্দরবানে বর্ণীল আয়োজনে পালিত হচ্ছে প্রবারণা পূর্ণিমা

fec-image

পাহাড়ি জলা বাদরবানে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব মাহা ওয়াগ্যাই পােয়েঃ বা প্রবারণা পূর্ণিমা। ওয়াগ্যাই পােয়ঃ কে কেন্দ্র করে শহর ও পাহাড়ি পল্লীগুলাত চলছে ধর্মীয় ও সামাজিক ঐতিহ্যের নানা অনুষ্ঠান।

সকল জাদীগুলোতে অবস্থানরত বৌদ্ধ ভিক্ষু সোয়াইং দান ও সকল প্রাণীজগতর মঙ্গল কামনায় জাদীতে-জাদীতে বিশেষ প্রার্থনার মাধ্যম শুরু হয়ছে মারমা সম্প্রদায়র ঐতিহ্যবাহী মাহা ওয়াগ্যই পোয়েঃ উৎবস। ওয়াগ্যই পোয়েঃকে ঘিরে উৎসবমুখর হয় উঠছে পাহাড়ি জেলা বাদরবান।

শনিবার (৮ অক্টোবর) রাতে বান্দরবান রাজার মাঠে আকাশে ফানুস উড়িয়ে ওয়াগ্যই পোয়েঃ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশসিং এমপি। পরে সরকারি-বসরকারি সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ফানুস উড়িয়ে অনন্দ ভাগাভাগি করেন।

এসময় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মারমা তরুণ তরুণীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও গান পরিবশনের মাধ্যদিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তুলেন।

এদিকে ওয়াগ্যই পোয়েঃ উপলক্ষ্যে দ্বিতীয় দিন রবিবারও (৯ অক্টোবর) সকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ক্যাং গুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সকালে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষেরা নতুন জামা-কাপড় পরিধান করে বৌদ্ধ ভিক্ষুর জন্য ক্যাংএ বিশেষ খাবার নিয়ে আসেন এবং সবাই মিলিত হয়ে সমবেত প্রার্থনা করেন।

জানা যায়, আষাঢ়ী পূর্ণিমার থেকে আর্ষিণী পূর্ণিমার পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস পালন শেষে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়র এই ওয়াগ্যই পোয়েঃ উৎবস। এই দিন দায়ক-দায়িকারা ৩ মাস বর্ষাবাস শেষ করে বিহার থেকে বের হয়ে সব বিবাদ ভুল গিয়ে একে অন্যের প্রতি সম্ভাষণ জানানা ও মনের সব সংকীর্ণতা পরিহার কর অহিংসা পরম ধর্মের দীক্ষিত হয়ে নিজ সংসার ফিরে আসে। আর এই দিন আকাশে ফানুস উড়িয়ে, বিশেষ প্রার্থনা, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন ও রথযাত্রাসহ নানা কৃষ্টি অনুষ্ঠানর মাধ্যমে নিজেকে পাপমুক্ত কর আগামী দিনের নতুন যাত্রায় অগ্রসর হয়। প্রতিবছর পূর্ণিমার তিথিত বৌদ্ধ ধর্মালম্বী মারমা সম্প্রদায়রা এউৎসবটি পালন করে থাকে। উৎসবকে ঘিরে মারমা পল্লীগুলোতে বর্তমানে বইছে আনন্দের বন্যা।

এদিকে ওয়াগ্যই পোয়েঃ উপলক্ষ্য রবিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন ক্যাংল ও পাড়ায় পাড়ায় উড়ানো হচ্ছে ফানুস, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা তৈরি, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন, রথ যাত্রা । আগামীকাল সােমবার (১০ অক্টোবর) সাঙ্গু নদীতে রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তিন দিনের অনুষ্ঠান শেষ হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: প্রবারণা পূর্ণিমা, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন