মানিকছড়িতে আসামী গ্রেফতার ও নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপনের দাবীতে বাঙালিদের মানববন্ধন
মানিকছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ির লাফাইন্দংপাড়ায় নিজ বসত ঘরে গত ২ সেপ্টেম্বর উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক নিহত কৃষক আবদুল মতিন (৯০) হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও নির্জণ জনপদে নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপনের দাবীতে মঙ্গলবার মানিকছড়ির গুচ্ছগ্রামে প্রশাসনের বাধারমুখে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গুচ্ছগ্রামবাসী ও বাঙালি ছাত্র পরিষদ।
বৃদ্ধ আবদুল মতিন হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার ও নির্জণ জনপদে নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপনের দাবীতে পূর্ব নির্ধারিত মানববন্ধন পালনের জন্য মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় মানিকছড়ি গুচ্ছগ্রামের শতশত বাঙালী নর-নারীরা ব্যানার পোস্টার হাতে নিয়ে দলবেধে খাগড়াছড়ি-চট্রগ্রাম সড়কের আমতলায় আসার আগেই গুচ্ছগ্রাম সড়কের মুখে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মানববন্ধনের প্রশাসনিক অনুমতি নেই মর্মে তাদের আটকে দেয়। পরে সেখানেই নিহতের পরিবার ও পরিজনের সাথে পুলিশের বাকবিতন্ডা শুরু হলে বিএনপি নেতা (সমীরণ গ্রুপ) এস.এস. রবিউল ফারুক ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আসাদুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ নেতা মো. টুটুল বিক্ষোভকারীদের সান্তনা দেন এবং প্রশাসনের সাথে কথা বলেন।
পরে ওসি মো. শফিকুল ইসলাম প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী লোকালয়ে নিরাপত্তা জোরদারসহ এজাহারভুক্ত দু’ব্যক্তিকে আটক করেছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টাসহ মামলার কার্যক্রম তদন্তাধীন রয়েছে। অহেতুক প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কাউকে রাজপথে কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না।
পরে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দ ও নিহতের পরিবার-পরিজনের অনুরোধে প্রতিবাদসভার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন তারা। বাঙালি ছাত্র পরিষদের স্থানীয় সভাপতি মো. মুকতাদের হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, নিহতের কন্যা রেহেনা আক্তার, ছেলে হযরত আলী, গুচ্ছগ্রামবাসী মো. আবুল কালাম, বাঙালি ছাত্র পরিষদের জেলা নেতা মো. মোস্তফা, এস.এস মাসুদ রানা ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাদেকুর রহমান সাদেক। এ সময় বক্তারা বলেন, পাহাড়ে একের পর এক নিরীহ বাঙালিদের ওপর উপজাতী সন্ত্রাসীরা নির্যাতন-নিপীড়ন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও নির্মমহত্যা কান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের ওইসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে তাদের অবৈধ কর্মকান্ডকে উস্কে দিচ্ছে। অন্যদিকে বাঙালিদেরকে প্রতিবাদও করতে দিচ্ছেনা।
আগামী ৯৬ ঘন্টার মধ্যে নিহত আবদুল মতিন হত্যায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারসহ নির্জণ জনপদে দ্রুত নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপনের জোরদাবী জানান তারা। অন্যথায় বাঙালি ছাত্র পরিষদ দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন বক্তারা।
উল্লেখ্য যে, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বৃদ্ধ কৃষক আবদুল মতিন (৯০)কে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। পরে নিহতের ছেলে মো. আলী হোসেন ওরফে ভানু মিয়া বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৮/১০ জন অজ্ঞাত নামা সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১ তারিখ: ৩.৯.১৫খ্রি.। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রিপ্রুচাই মারমা (৪৮), পিতা-মৃত মমংশে মারমা, ও উসামং মারমা (৩৮), পিতা-চোরাঅং মারমাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। বর্তমানে মামলাটি পুলিশি তদন্তাধীন রয়েছে।