মুসলিম যুবককে বিয়ে করায় কুতুকছড়িতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে ত্রিপুরা যুবতী অপহৃত

পার্বত্য নিউজ রিপোর্ট:

প্রেম করে সারা বাংলাদেশেই এক ধর্মের অনুসারী অন্য ধর্মের অনুসারীকে বিয়ে করছে। অনেক ক্ষেত্রে এ বিয়েতে ধর্মান্তরে ঘটনাও ঘটছে। আমাদের সংবিধানও আন্তঃধর্মীয় বিয়ের ক্ষেত্রে কোনো বাধা প্রদান করেনা। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে এ নিয়ম চলেনা। সেখানে কোনো উপজাতি যুবতি বাঙালী যুবককে বিয়ে করলে তাকে চরম করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা উপজাতি যুবতিকে অপহরণ, গণধর্ষণ করে তাকে হত্যা করে। কখনো এসিড মেরে ঝলসে দেয়া হয়। যুবকটি যদি মুসলিম হয় তাহলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হয়। শুধু বিয়ে নয় এ অঞ্চলে কোনো উপজাতি তরুণী কোনো বাঙালী তরুণের সাথে প্রেম, মেলামেশা বা চলাফেরা করলেও একই পরিণতি ভোগ করতে হয়।

সাধারণ উপজাতিদের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা না থাকলেও কিছু পাহাড়ী সংগঠন এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। পাহাড়ীদের সংগঠন ইউপিডিএফ ও জেএসএস মূলতঃ বাম ধারার সংগঠন – যারা সব সময় ব্যাক্তি ও বাক স্বাধীনতা এবং মুক্তচিন্তার কথা বলে থাকে। অথচ উপজাতি তরুণীদের ব্যাক্তি স্বাধীনতা এখানে একবারেই নেই। কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলে প্রত্যেক বছরই এ ধরণের অসংখ্য ঘটনা ঘটলেও দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ব্যাপারে একেবারেই চুপ মেরে থাকে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে গতকাল রাঙামাটির কুতুকছড়িতে।

শুধুমাত্র বাঙালী মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করার অপরাধে রাঙামাটির কুতুকছড়িতে চলন্ত অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে রিনা ত্রিপুরা নামে পাহাড়ি যুবতিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারটার সময় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় চারজন পাহাড়ি যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল।। অপহৃত রীনা ত্রিপুরার বাড়ি বান্দরবানের লামা উপজেলার কুমারী পাড়ার ইয়াং ছড়া গ্রামে বলে জানা গেছে।

নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে কুতুকছড়ি বাজারে অবস্থিত পুলিশ ফাড়িঁ ও সেনাক্যাম্পে গিয়ে অটোরিক্সা চালকসহ নোমান নামে এক যুবক অভিযোগ করে তার বিবাহিত স্ত্রী রিনা ত্রিপুরাকে কয়েকজন উপজাতীয় দুর্বৃত্ত ধরে জঙ্গলের দিকে নিয়ে গেছে।

এসময় তারা বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের মারধর করে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেয়। পরে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে, পুর্নলাল চাকমা (২৫), সুজন চাকমা(২৪), পাভেল চাকমা (২২) ও অর্জুণ চাকমা (৪০) নামে চারজনকে আটক করে নানিয়ার থানায় সোর্পদ করা হয়। আটকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল।

নিরাপত্তা বাহিনীর নির্ভরশীল সূত্র জানায়, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনার সাথে জড়িত আরো আটজনের নাম স্বীকার করেছে। তাদের মধ্যে ইউপিডিএফ নেতা বাবলু চাকমা ও পাপুমনি চাকমার নামও রয়েছে এবং অপহরণের সময় উক্ত দুই জনের নেতৃত্বে অপহরণ ঘটনা ঘটেছে বলেও জানায় আটককৃত চারজন। তারা জানায়, বাবলু চাকমা ও পাপুমনি চাকমা মোটর সাইকেল যোগে এসে অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে নোমানকে মারধর করে গাড়ির ভেতরে থাকা রিনা ত্রিপুরাকে টেনে হেচড়ে গভীর জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়।

পরে নিরাপত্তা বাহিনী আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন পাহাড়িকে নিয়ে এসে কুতুকছড়ি বাজারে হাজির হলে স্থানীয়রা ও রিনা ত্রিপুরার স্বামী নোমান উল্লেখিত আটককৃত চারজনকে চিহ্নিত করলে সাথে সাথে তাদের আটক করে নানিয়ারচর থানায় সোপর্দ করা হয়।

এদিকে কুদুকছড়িতে নিরাপত্তা বাহিনী কর্র্তক ২জন নারীসহ ৬ নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক ও মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ইউপিডিএফ। ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা এক বিবৃতিতে রাঙামাটি জেলার কুদুকছড়িতে ১১ জুন মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক ২ জন নারীসহ ৬ জন গ্রামবাসীকে আটক ও মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী কুদুকছড়ি পূর্বপাড়া ও হাজাছড়ি পশ্চিম পাড়ায় হানা দিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীদের মারধর করে ও ধরপাকড় চালায়। প্রথমে রাজেন্দ্র লাল চাকমার বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করে। এরপর তারা  রাজেন্দ্র লাল চাকমা(৩৫) পিতা- গয়াসুর চাকমা, গ্রাম-কুদুকছড়ি পূর্ব পাড়া ও তার স্ত্রী স্বপ্না বড়ুয়া, জ্ঞান প্রভা চাকমা(জিতা মা), স্বামী- উদয় শংকর চাকমা, পাভেল চাকমা(২০) পিতা-শুক্র কুমার চাকমা, গ্রাম-হাজাছড়ি পশ্চিম পাড়া, অর্জুন কুমার চাকমা (৩২) পিতা-বাঙাল্যা চাকমা, গ্রাম-শুকর ছড়ি ও কালা বাঁশি চাকমা (১৯) পিতা-পদ্ম রঞ্জন চাকমা, গ্রাম- হাতিমারা-এই ৬ জনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে কালা বাঁশি চাকমা ও অর্জুন চাকমা কুদুকছড়ি পূর্ব পাড়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।

পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের জিম্মায় রাজেন্দ্র লাল চাকমা, তার স্ত্রী স্বপ্না বড়ুয়া ও জ্ঞানপ্রভা চাকমাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে অপর ৩ জনকে এখনো আটক রাখা হয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি ও নিরাপত্তাবাহিনী কর্তৃক নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর এ ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

2 Replies to “মুসলিম যুবককে বিয়ে করায় কুতুকছড়িতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে ত্রিপুরা যুবতী অপহৃত”

  1. একটা একটা ইউপিডিএফ এর কর্মি ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর

  2. কাইত্ত্যা ছুদন্নের ছইয়া, শেয়াল-কুকুরেরে খাওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন