রাঙামাটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬, মোকাবেলায় লাখ টাকা বরাদ্দ

fec-image

পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি সবচেয়ে ঝুকিঁপূর্ণ ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা। বছরের বর্ষা মৌসুমে হাজার-হাজার মানুষ ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবা সংস্থা এ রোগ নিরাময়ে এবং স্বাস্থ্য সচেতনায় কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সারাদেশে যখন ডেঙ্গু নিয়ে আতংক বিরাজ করছে ঠিক তখনি রাঙামাটিতেও ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মিলেছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬ জন। রাঙামাটি হাসপাতাল সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়, হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা রাঙামাটির বাসিন্দা। আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। ডাক্তারদের মতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কেউ আশঙ্কাজনক নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাঙামাটিতে প্রথম ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মিলে সোমা চাকমা নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর মাধ্যমে। তিনি ঢাকা মহিলা কলেজের ছাত্রী এবং রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।

রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন সুমী আক্তার নামের এক গৃহবধূ। তার স্বামী মোবারক হোসেন জানান, কিছুদিন আগে তারা রাজধানী ঢাকায় বেড়াতে গিয়েছেন। সেখান থেকে আসার পর তার স্ত্রী জ্বরে আক্রান্ত হয়। এরপর রাঙামাটি সদর হাসপাতালে পরীক্ষা করালেও তার স্ত্রীর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। বর্তমানে এ গৃহবধূ চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে সারাদেশের ন্যায় পুরো জেলা ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে। উল্লেখযোগ্য ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া না গেলেও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পরামর্শ প্রদান করছে চিকিৎসকরা। ডেঙ্গু মোকাবেলায় এক লাখ টাকা ফান্ড তৈরি করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। গড়ে তুলেছেন ৬ সদস্য বিশিষ্ট ডেঙ্গু মনিটরিং সেল। কমিটির নেতৃত্বে আছেন রাঙামাটি সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ আব্দুল হাই।

ডেঙ্গু মোকাবেলায় বসে নেই রাঙামাটি পৌরসভাও। মশা নিধনে ইতোমধ্যে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঔষধ ছিটানোর কাজ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শওকত আকবর খান বলেন, রাঙামাটিতে ডেঙ্গু এখনো আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেই। তবে ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ জন্য হাসপাতালের ল্যাবকে আপডেট করা হয়েছে।

ডা: শওকত আরও বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেয়া হবে। রোগটি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বস্থরের জনবল এক সাথে কাজ করছে।

ডা: শওকত ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে পরামর্শ দিয়ে বলেন, দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টাঙ্গাতে হবে। বাড়ি- অফিস সকল স্থানের আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং জমানো পানি না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা: শহীদ তালুকদার বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে। রোগটি মোকাবেলায় রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাধ্যমে এক লাখ টাকার একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত কোন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসকদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু, পাহাড়ি, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন