রাঙ্গুনিয়ায় প্রেমিকাকে হত্যার চেষ্টায় ঘাতক প্রেমিক আটক

 
 
আরিফুল হাসনাত, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ
রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় রীমা আক্তার নামে এক যুবতীকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় লোকজনের হাতে ধরা পড়ে ঘাতক। এতে রীমা আক্তারের প্রচুর রক্তক্ষরণসহ নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার লিচুবাগান এলাকায় রীমার মামাতো বোনের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
 
জানা যায়, রীমা আক্তার মরিয়মনগর রশিদিয়া পাড়ার মৃত. রেজাউল করিমের কন্যা এবং রাঙ্গুনিয়া কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। অন্যদিকে ঘাতক মো. একরাম কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার চকিদার পাড়ার মফিজ উদ্দীনের ছেলে এবং রাঙ্গুনিয়া নুরুল উলুম ডিগ্রি মাদ্রাসার আলিমের ছাত্র। রীমা ও একরাম দীর্ঘ দিন ধরে প্রেম করে আসছে।
 
 
গত বুধবার রীমা একরামকে ফোন করে লিচুবাগান এলাকায় তার মামাত বোনের বাসায় আসতে বলে। ওই দিন একে অপরের সাথে বাড়াবাড়ি করে এবং ক্ষুদ্ধ হয়ে একরাম সেখান থেকে চলে আসে। এর পরের দিন আবারও একরাম লিচুবাগানে রীমার সাথে দেখা করতে যায় এবং পাশের একা ঘরে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। ফলে রীমার প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয় এবং চামড়া ছিদ্র হয়ে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে আসে। আহত রীমা চিৎকার করে ওঠলে এলাকার লোকজন ছুটে আসে এবং একরামকে ধরে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সাথে সাথে রীমাকে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
 
মামাতো বোন রোকেয়ার বক্তব্য, রীমা গত দু’দিন আগে আমার বাসায় বেড়াতে আসে। বুধবার ছেলেটি আমার বাসায় এসে রীমার সাথে দেখা করতে এসেছে বললে আমি রীমাকে ডেকে দিই। এরপর রীমা , রীমার বড়ভাই আহসান কবীর ও চাচা মো. সেকান্দার ছেলেটির সাথে অনেক্ষণ কথা বলে। এক পর্যায়ে ছেলেটি রাগী ভঙ্গিতে বের হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে ছেলেটি আবারও এখানে আসে এবং রীমার সাথে কথা বলে। আমি বাথরুম থেকে রীমার চিৎকার শুনতে পেয়ে বেরিয়ে এসে আহত অবস্থায় রীমাকে দেখতে পাই। এবং ছেলেটি দৌড়ে পালানোর সময় লোকজন তাকে ধরে ফেলে।
 
রীমার বড়ভাই আহমদ কবীরের বক্তব্য, রীমার সাথে ছেলেটির প্রেমের সম্পর্ক ছিলনা। সে জোরপূর্বক সম্পর্ক করতে চাইলে আমরা জানতে পেরে তাকে বাঁধা দিই এবং হুঁশিয়ার করি। আর তার ফলেই ছেলেটি ক্ষুদ্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটায়। ঘাতক প্রেমিক একরাম জানান, তাদের দীর্ঘদিনের প্রেমের সূত্রপাত হয় প্রাইভেট পড়ার মধ্য দিয়ে। তার বড় ভাই বিদেশ থেকে এসে তাকে অন্যত্র বিয়ে দিতে চেষ্টা চালায়। আর তাতে আমি ক্ষুদ্ধ হয়ে তার উপর প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালাই।
 
রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এম. এম মোর্শেদ জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। লোকজন তাকে ধরে আটকে রাখে এবং আমরা সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন