রাজস্থলীতে অবৈধ গাড়ির রমরমা ব্যবসা, প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি

fec-image

বাংলাদেশে সব জায়গায় অবৈধ গাড়ি চালানো দন্ডনীয় অপরাধ। এই আইন ভঙ্গ হলে শাস্তি স্বরূপ নগদ অর্থদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলায় সড়ক পরিবহন আইনের কোন তোয়াক্কাই নেই। অধিকাংশই জীপ, মিনি ট্রাক, টি এস যানবাহনের নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। কোনরকম নীতিমালা ছাড়াই এসব গাড়ি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে মালামাল নিয়ে চলাচল করছে। শুধু তাই নয় সেসব অবৈধ গাড়ির মালিকরা আবার গাড়ির চাবি তুলে দিচ্ছে অদক্ষ লাইসেন্সবিহীন চালকদের হাতে। ফলে প্রায় সময় দূর্ঘটনার মত ঘটনাও ঘটছে।

এসব অবৈধ গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন বেপরোয়া গাড়ীর চালকদের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে অনেককে। গত কয়েক দিন আগে সীমান্ত সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। সেসময় গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে এক ব্যক্তি মারা যায়। পরে খবর নিয়ে জানা যায়, যে গাড়িটা চালাচ্ছিলেন তার কোন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলনা। যিনি মারা গিয়েছিলেন, অথচ তার পরিবারের তিনিই একমাত্র উপার্জমক্ষম ব্যক্তি। যার উপর বাকি পরিবারের সদস্যরা নির্ভরশীল।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গাড়ির কোম্পানীরা অতি লাভের আশায় পুরাতন গাড়ি কিনে এনে ব্যবসায় নামিয়েছেন। তাঁদের জীপ (চাঁদের গাড়ি) মিনি ট্রাক গাড়িগুলো রাজস্থলী, বাঙালহালিয়াই, বিভিন্ন পাহাড়ি সড়কে মালামাল পরিবহন করে। আবার টি এস, ( লট) লেখা গাড়ি গুলোর সামনে সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার কৃত সাইন বোর্ড লিখা থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টি এস গাড়ির মালিক বলেন, তাঁদের গাড়ির কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। পাহাড়ে কোনরকম বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এসব গাড়ি চলাচল করতে পারে। ড্রাইভারের কোনো বৈধ লাইসেন্স ছিল কিনা প্রশ্নের জবাবে বলেন, ড্রাইভারদের কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। তাহলে বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালানোর জন্য কিভাবে ড্রাইভার হিসেবে দিলেন তার প্রশ্নের সঠিক জবাব তিনি দিতে পারেননি ট্রাক মিনি ট্রাক কোম্পানী।

স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, কিছু অসাধু চক্র বেশি লাভের আশায় কোন প্রতিষ্ঠান বা মালিকের কাছ থেকে অচল ও পুরাতন গাড়ি কম দামে কিনে নেয়। এরপর সেই মেয়াদহীন ও ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোকে কোন রকম ঘষামাজা করে তার উপরে রঙ লাগিয়ে নতুনের মত চকচকে বানিয়ে ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সড়কে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের জন্য দিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে ফিটনেসবিহীন গাড়িকে শুধুমাত্র রঙ করিয়ে যাত্রী পরিবহনের জন্য সড়কে ছেড়ে দিলে বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অপর দিকে গোপালপুরা হতে কিছু নাম্বারবিহীন ড্রাম্পার দিয়ে পাহাড়ের মাটি পরিবহন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) রাঙ্গামাটি সার্কেলের মোটরযান অফিস সহকারী সোলয়মানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি সদর হতে রাজস্থলী উপজেলা অনেক দূরে হওয়ায় এসব অবৈধ গাড়ি চলাচল অনেকটা তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তনু কুমার দাশকে জানার পর তিনি প্রশাসনিকভাবে এসব অবৈধ গাড়ি চলাচলের অভিযান চালাবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন