পঁচিশ বছরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় হতাশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী

রাজস্থলীর ঘিলাছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে এমপিওভুক্ত করার দাবি

fec-image

দীর্ঘ পঁচিশ বছর পরও এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ঘিলাছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সম্প্রতি সরকার যে এমপিও নিবন্ধন দিয়েছে তাতেও এ প্রতিষ্ঠানের নাম না থাকায় চরম হতাশ শিক্ষক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে বাবু সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা ও এলাকার বিত্তবানদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা করে বিদ্যালয়টি। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি তারিখ থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করলেও এখনও এমপিও হয়নি। ফলে মানবেতর জীবন যাপনের পথ দীর্ঘ হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পরও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ২৫ বছর পর গত ১৮ অক্টোবর বুধবার প্রকাশিত এমপিও ভুক্তির নিবন্ধনের তালিকায় এ প্রতিষ্ঠানের নাম না থাকায় সংশ্লিষ্ট সকলে হতাশ।

জানা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সর্বমোট ২৫০জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের ফলাফলও ভাল। শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৪ জন। কর্মচারি রয়েছে ৩ জন। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক চিংঅংপ্রু মারমা জানান, খুবই কষ্ট হয়। আশায় আশায় এত বছর ধরে শিক্ষকতা করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রাপ্তির ফলাফল শুন্যের কোটায় এসে দাঁড়িয়েছে।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শ্রদ্ধা শংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান খুব হতাশা কাজ করছে। এ বিদ্যালয়ের অসহায় দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের মুখ দেখে অনেকটা দায় নিতে পরে আছি। এতবড় একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনে হয় যেন অযত্ন অবহেলার ও বৈষম্যের দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। কেন এমপিও হল না তা আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষকদের সমস্যাগুলো প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্র বলেন, স্যারদের মনে আনন্দ দেখলে ভাল লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিনা বেতনে স্যারেরা শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল কুমার তঞ্চঙ্যা জানান, এমপিও ভুক্তের আশায় শুরু থেকে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। অনেক স্বপ্ন দেখেছি। আমরা অনেকবার বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করে যাচ্ছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এবারেও হয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম পুরন করে জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো স্বয়ংসম্পূর্ণ।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি এর সভাপতি জানান, কেন এমপিও ভুক্ত হল না। তা আমাদের জানা নেই। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় আমরা খুবই হতাশাগ্রস্থ। যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তারা এমপিওভুক্তির আশায় ছিল। এখন কি করব তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। চাপও দিতে পারছি না। যেন সবার মাঝে হতাশা কাজ করছে। সব কিছু মিলিয়ে ঝিমিয়ে পড়ার অবস্থা। এ থেকে উত্তরণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সদয় হলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়া থেকে মুক্তি পাবে।

এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয়ের পাশে অবকাঠামো উন্নয়নে একটি বিল্ডিং স্থাপন করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তি করা না হলে অদুর ভবিষ্যতে বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোড়ালোভাবে দাবি জানাচ্ছি। বিদ্যালয়টি এমপিভুক্ত করে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন