রামুতে জমির বিরোধে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাট

fec-image

কক্সবাজার রামুর রশিদনগরে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বে প্রবাসীর পরিবারকে জমিতে স্থাপনা নির্মাণে সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক গুলিবর্ষণ, হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়া মামুন মিয়ার বাজারে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রশিদনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ নাছিরাপাড়া এলাকার মৃত হাজি গুরা মিয়ার মেয়ে সামিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, পানিরছড়া বাজারের পার্শ্ববর্তী তাদের স্বত্ত্বদখলীয় জমিতে মঙ্গলবার সকালে ঘেরা-বেড়া ও স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছিলো। কাজ চলাকালে ধলিরছড়া নাছিরাপাড়া এলাকার মৃত আবদুর রহমানের পুত্র আব্দুল গনি ও আবদুল গনির পুত্র রশিদনগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মাসুমের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন অস্ত্র, লাটি-সোটা নিয়ে তাদের উপর আকষ্মিক হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে এবং তার পরিবারের সদস্য ও কর্মরত শ্রমিকদের মারধর, বসত ঘর, জমির পাকা সীমানা খুঁটি ও বেড়া ভাংচুর করে। এছাড়াও হামলার আগে সন্ত্রাসীরা বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সকল সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে। হামলা শেষে মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলার পর কয়েকরাউন্ড গুলিবর্ষণ করে সটকে পড়ে হামলাকারীরা।

হামলাকার শিকার সামিনা ইয়াসমিন আরো জানিয়েছেন, তার প্রবাসী ভাই গিয়াস উদ্দিন ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ২৪৪২ নং কবলামূলে সাড়ে ৮ কড়া জমি ক্রয় করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু হামলাকারী ভূমিগ্রাসী চক্রটি প্রভাবশালী, ক্ষমতাবান হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন জমিটি জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এমনকি তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করে আসছে। চাঁদা না দিয়ে এখানে জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ সহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে।

এনিয়ে তিনি (সামিনা) কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এমআর মামলা (নং ২২২২/২০২১) দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত এ মামলায় গত ১ আগস্ট আবদুল গনি গংকে বাড়িতে প্রবেশে করে। অথচ বিজ্ঞ আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চক্রটি তাদের মারধর, জমিতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং আবারও প্রাণনাশের চেষ্টা সহ সন্ত্রাসী হামলার আশংকা করছেন।

ঘটনাস্থলে আসার রামু থানার এসআই শাহাদাৎ জানিয়েছেন, সামিনা ইয়াসমিনের দায়েরকৃত এমআর মামলায় বিজ্ঞ আদালত ২য় পক্ষকে বারিত করে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেখানে জমি অনেক রয়েছে। কোন জমি তা নির্দিষ্ট করে দেয়নি। যার ফলে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো জানান- পুলিশ দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়ার এ ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সজাগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত রশিদনগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মাসুম জানিয়েছেন, আদালত মাত্র সাড়ে ৪ কড়া জমিতে বাড়ি করার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখানে জমি আছে বেশি। অতিরিক্ত জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় বাঁধা দেয়া হয়েছে। তিনি হামলা ও ভাংচুরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ভাংচুর, লুটপাট, হামলা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন