রামুর গর্জনিয়ায় মন্দির থেকে স্বর্ণ মূর্তিসহ ৩ মূর্তি চুরি

a q

রামু প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় দু’শ বছরের পুরনো মন্দিরের বেড়া ভেঙ্গে একটি স্বর্ণ মূর্তি ও দু’টি পিতলের মূর্তিসহ মোট ৩টি মূর্তি এবং মন্দিরে ব্যবহার্য সব মালামাল নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা। এতে মন্দিরের চারশত সেবকের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার রাতে ইউনিয়নের পূর্ব বোমাংখিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মন্দিরের পুজারী অভিচক্রবর্তী জানান, সে প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোসহ ধর্মীয় অর্চণা করে বাড়ি চলে যান । শনিবার সকালে এসে আবারও একই ধরনের পূজা-অর্চণা করতে মন্দিরের দরজা খুলতেই দেখতে পান এ মন্দিরের বড় স্বর্ণ মূতিটিসহ পিতলের ছোট বাকী দুটো মূর্তি মিলে মোট ৩টি মূর্তিই নেই এ মন্দিরে। মন্দিরের উত্তর পাশের শক্ত বেড়া ভেঙ্গে কে বা কারা এ মন্দিরে ঢুকে পূজার কাজে ব্যবহার্য কাসা, বাদ্য শংখ, শিব লিঙ্গ ও ঘন্টিসহ সব ধরনের পিতল ও অন্যান্য তৈরী আসবাবপত্র নিয়ে যায় এ সময়। হতাশ ও ক্ষোভে জড়ো হওয়া মন্দিরের সেবকরা জানান, ২ শত বছরের এ মন্দিরটির সেবায়েত মৃত সূধাংশু কুমার শর্মার পরে এখানে এ মন্দিরটি দেখাশুনা করতে থাকে সিং পরিবারের সদস্যরা।

ঐতিহাসিক বোমাং রাজার জমিদারীর কাচারী খ্যাত এ পূর্ব বোমাংখীল গ্রামের একমাত্র মন্দিরের শতশত সেবকরা মন্দিরে চুরির ঘটনায় মর্মাহত। সেবকদের মধ্যে অমল বাবু, পূজারী অভিচক্রবতী, সেবক পাখি রাণী শর্মা, সমাজ সেবক মো: ইসমাঈল ও ওয়ার্ড মেম্বার আতাউল্লাহসহ সকলের দাবী এ ধরনের কাজ জঘন্য। এ এলাকায় চোরের উপদ্রব বেড়ে গেছে দীর্ঘদিন। এখানে কোন পুলিশি টহল নেই, নেই কোন পাহারাদার। এ কারণে নিয়মিত এসব অঘটন ঘটছে । এর আগে এ এলাকার প্রায় প্রতিটি গ্রাম্য দোকানে এক বার থেকে ছয় বার পর্যন্ত চুরি হয়েছে সম্প্রতি সময়ের মধ্যে । অথচ এ বিষয়ে আইনী কোন ব্যবস্থা নেই এখানে।

অপরদিকে নাম প্রকাশ না কারা র্শতে একাধিক এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি গর্জনিয়া- কচ্ছপিয়ায় চোর ডাকাতে উপদ্রব বেড়েছে। বিশেষ করে গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল, বেলতল কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়া ও মৌলবীর কাটায় এসব চোর ডাকাত বাসা বেঁধেছে। এদের মধ্যে অনেককেই প্রকাশ্যে গর্জনিয়া বাজারসহ প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরে বেড়ায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলে।

এদিকে এ ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মজিদ গর্জনিয়ায় ছুটে আসেন। পুলিশের রমজান হোসেন ওয়ার্ড মেম্বার আতাউল্লাহসহ অনেকেই শনিবার সকালে এ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বিকেলে গর্জনিয়া পুলিশের এসআই রমজান হোসেন সাংবাদকদের জানান, চুরি হওয়ার বিষয়টি সঠিকই তবে তিনি এর বেশী কিছু বলতে চাননি।

মেম্বার আতাউল্লাহ বলেন, মন্দিরের বড়-ছোট ৩টি মূর্তিসহ অনেক কিছু চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। তবে কে বা কারা এ চুরি করেছে তা বিধাতা ছাড়া কেওই জানেন না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন