রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকদের আগমন প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে

pic-faruk-ukhiya-10-12-2016-copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রবালদ্বীপ হিসাবে খ্যাত সেন্টমার্টিনে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। ভ্রমন পিপাসুদের পদচারণায় নতুন রূপে সেজেছে এ দ্বীপটি। পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্ভাবনাময় পর্যটন খাত আরও প্রবলভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যটন শিল্প বিশ্লষকরা। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে মিল রেখে সেন্টমার্টিনে প্রযুক্তিগত  সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য দাবী করছেন পর্যটকরা।

পর্যটন মৌসুম শুরু হতে না হতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তথেকে স্বপ্নের দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ভ্রমন করতে আসা শুরু করেছে পর্যটকরা। গত শুক্রবার টেকনাফ জেটি থেকে ৫টি বিলাস জাহাজ রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক বহন করে সেন্টমার্টিনে যাত্রা শুরু করেছে। পর্যটকদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় পর্যটন শিল্পের জন্য ইতিবাচক বলছেন নাগরিক সমাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিছুদিন বন্ধ থাকলেও শুক্রবার থেকে পর্যটনবাহী ৫টি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। কেয়ারি ক্লুজার এন্ড ডাইং এর ম্যানেজার শাহ আলম পার্বত্যনিউজকে জানান, স্বল্প সময় বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার থেকে পুরোদমে পর্যটকদের সুবিধার্থে সেন্টমার্টিনে চলাচল শুরু হয়। প্রায় ৫ শতাধিক পর্যটক যাত্রী সেন্টমার্টিনে গেছে।

সূত্রে প্রকাশ, এলসিটি কুতুবদিয়া, গ্রিনলাইন, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও ক্লুজার নামক আরও ৪টি জাহাজ করে অন্তত ২ হাজারের অধিক পর্যটক সেন্টমার্টিনে ভ্রমন করতে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে ফারহান ও কাজল নামক আরো ২টি বিলাস বহুল জাহাজ আসছে পর্যটক বহন করতে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ পার্বত্যনিউজকে বলেন, মৌসুমের শুরুতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকদের আগমনে দ্বীপাঞ্চল হয়ে উঠেছে মূখরিত। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি নৌ-পথে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীও দায়িত্বপালন করছে।

জানা যায়, টেকনাফ জেটি দিয়ে প্রতিদিন ৫টি জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে আসা-যাওয়া করছে। টেকনাফ ৪২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিনে যেতে হয়। তম্মধ্যে নাফ নদী ৩০ কিলোমিটার ও সাগর ১২ কিলোমিটার। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের সময় টেকনাফ থেকে এবং বিকেল ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজগুলো চলে আসে। সেন্টমার্টিনে আসা-যাওয়ায় প্রায় সাড়ে ৪ ঘন্টা সাগর পথ পাড়ি দিতে হয় পর্যটকদের।

শুক্রবারে দেখা যায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে চলাচলকারী ৫টি জাহাজে পর্যটকদের তিলধারনের জায়গা ছিল না। নতুন দম্পতি থেকে শুরু করে শিক্ষাবীদ, ডাক্তার, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্রীসহ অসংখ্য নারী পুরুষ সেন্টমার্টিনে ভ্রমন করতে গেছে। বলতে গেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ এখন পর্যটকদের ভরপুর।

ময়নামতি রির্সোসের স্বত্ত্বধিকারী মো: ছিদ্দিকুর রহমান দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ছোট বড় ২শতাধিক কটেজ ও রিসোর্স রয়েছে। তৎমধ্যে ব্লু-মেরিনা রির্সোস, স্বপ্নবিলাস অবকাশ’সহ বেশ কয়েকটি আধুনিক মানের রির্সোসও রয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্নাস শেষ বর্ষের ছাত্রী কনা বলেন, মেডিকেল কলেজের পড়ুয়া বোনকে নিয়ে পিতা-মাতার সাথে সেন্টমার্টিনে ভ্রমন করতে এসেছে। এটি তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। দীর্ঘ সাগরপথ পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাস্তবে দেখতে পেয়ে তিনি বেশ অভিভূত। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতি দেখে অসন্তোষও প্রকাশ করে তিনি।

নারায়গঞ্জের আবু ছায়েম ও রাজশাহীর ডাক্তার দম্পতি ক্ষোভের সহিত বলেন, সেন্টমার্টিনকে পর্যটকবান্দব করতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তারা নেপাল ও ভিয়েতনামের মত এ দ্বীপকে সাজানো হলে পর্যটক খাত থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থানীয় অধিবাসীদের অভিমত এ দ্বীপাঞ্চলকে ইকোট্যুরিজমে উন্নতি করন করে এলাকার মানুষকে পর্যটন শিল্পে সম্পৃত্ত করা। এর ফলে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে।

পর্যটক বিশ্লেষকদের অভিমত সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিদিন পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পাওয়ায়  বাংলাদেশের সম্ভবনাময় পর্যটন শিল্পখাত বিশ্বের কাছে পরিচিত হয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন