“টেকনিক্যাল টিম আনুমানিক ২০০টি রোহিঙ্গা পরিবারের সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহন করবেন।”
প্রতিমন্ত্রী অং মিয়োর নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের দল এখন টেকনাফে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার টেকনিক্যাল টিমের পরিবার যাচাই-বাছাই শুরু

fec-image

প্রতিদিন মংডু থেকে টেকনাফ আসার পরিবর্তে উক্ত টেকনিক্যাল টিম ১৫ মার্চ থেকে আনুমানিক ২২ মার্চ পর্যন্ত টেকনাফে অবস্থান করবেন এবং প্রতিদিন আনুমানিক ৭০ জন রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহন করবেন।

বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন তালিকা যাচাই-বাছাই করছে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল টিম।

বুধবার (১৫ মার্চ) বুধবার সকালে মিয়ানমারের ১৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সমাজ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অং মিয়োর নেতৃত্বে টেকনাফ স্থলবন্দর রেস্ট হাউজে এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

এর আগে বুধবার সকাল ১০ টার সময় বাংলাদেশের টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট জেটি হয়ে বাংলাদেশে আসেন মিয়ানমারের ২২ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম। এরপর সকাল ১১ টার দিকে টেকনাফের স্থলবন্দরের রেস্ট হাউজে পৌঁছেন তারা। এদের মধ্যে টেকনিক্যাল টিমের ১৭ সদস্য রয়ে যান। মন্ত্রী ছাড়া অন্যসব মিয়ানমার অভিবাসন ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। আর ৫ জনের নিরাপত্তা টিমের সদস্য মিয়ানমারের ফিরে যান বলে নির্ভরশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল টেকনাফ আসেন।

প্রথম দিন সকাল থেকে প্রায় ২০ পরিবারের লোকজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে প্রতিনিধি দলটি। সার্বিক নিরাপত্তার মাধ্যমে বাসে করে টেকনাফের লেদা-নয়াপাড়া ক্যাম্পের বসবাসকারী ২০ পরিবারের ৭০জন রোহিঙ্গাকে টেকনাফ স্থলবন্দরের ভেতরে রেস্টহাউজের পেন্ডেলে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে প্রতিটি পরিবারের লোকজনকে ডেকে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম করা হয়।

এ সময় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) প্রতিনিধিসহ সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।

সাক্ষাৎকার দিয়ে ফেরা অনেক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন,” মিয়ানমারের কোন এলাকায় ছিলেন ও পাশে কারা কারা ছিল ইত্যাদি বিষয় জানার চেষ্টা করছে প্রতিনিধি দলটি।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মূলত ২০১৮ সালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গাদের একটি তালিকা দেয়। এরপর মিয়ানমারের ৬৮ হাজার রোহিঙ্গা ফিরতি তালিকা পাঠায়। সেখানে অনেকের পরিবারের মধ্য সদস্য বাদ পড়েছে। এ বিষয়টি তাদের (মিয়ানমারকে) অবহিত করা হয়েছে । তারই অংশ হিসেবে তাঁরা (মিয়ানমার) আগ্রহ প্রকাশ করছে, বাদ পড়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন, কেন বাদ পড়েছেন এবং তাদের দলিলপত্র দেখবেন। তারই অংশে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশে আসা।’

কক্সবাজার কার্যালয়ের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) সামছুদ্দৌজা নয়ন জানান, দুই দেশের পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল টিমের ১৭ সদস্য বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। বেশ কয়েকদিন এখানে থেকে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের মিয়ানমার অনুবিভাগ শাখার সহকারী সচিব বিশ্বজিত দেবনাথ স্বাক্ষরিত ১৪ মার্চের একটি পত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে আশ্রিত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের মিয়ানমারে অতীত আবাসন নিশ্চিত করার জন্য নিয়ানমারের ২২ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম আনুমানিক ২০০টি রোহিঙ্গা পরিবারের সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহন করবেন।

উল্লেখ্য, প্রতিদিন মংডু থেকে টেকনাফ আসার পরিবর্তে উক্ত টেকনিক্যাল টিম ১৫ মার্চ থেকে আনুমানিক ২২ মার্চ পর্যন্ত টেকনাফে অবস্থান করবেন এবং প্রতিদিন আনুমানিক ৭০ জন রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহন করবেন। সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহনে রোহিঙ্গারা প্রতিদিন ক্যাম্প হতে বাসযোগে উক্ত স্থানে যাতায়াত করবেন। “

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন