‘রোহিঙ্গা’ বলায় মিয়ানমারে পোপের সমালোচনা

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ সফরকালে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করায় মিয়ানমারের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোপ ফ্রান্সিসের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে এ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। ঢাকায় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি বললেও পোপ ফ্রান্সিস যখন মিয়ানমার সফর করছিলেন, তখন এ শব্দের ব্যবহার এড়িয়ে যান তিনি। শুক্রবার ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস ঢাকার একটি গির্জায় কয়েকজন রোহিঙ্গার দুর্দশার কথা শোনেন এবং তিনি নিজেও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেন। খবর বিবিসির।

‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা রোহিঙ্গাদের কোনো জাতিগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকার করে না। তাদের কাছে তারা ‘অবৈধ বাঙালি’। মিয়ানমারে গিয়ে তিনি যখন ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি বলেননি, তখন মিয়ানমারের ক্ষুদ্র ক্যাথলিক গোষ্ঠী তার এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছিল; প্রশংসা করেছিলেন কট্টরপন্থী বৌদ্ধরাও। কিন্তু পোপ ফ্রান্সিস ঢাকায় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করেছেন এবং সেইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে রোমে ফিরে আসার পথে বিমানের ভেতরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেনÑ কেন তিনি মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পোপ ফ্রান্সিস ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করার পর মিয়ানমারের অনলাইনে এর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ছে।

পোপ ফ্রান্সিসের সমালোচনা করে অং সো লিন নামে মিয়ানমারের এক নাগরিক ফেসবুকে লেখেন, তিনি (পোপ) হচ্ছেন একটা গিরগিটির মতো। আবহাওয়ার কারণে যার গায়ের রঙ বদলে গেছে। আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী সোয়ে সোয়ে মন্তব্য করেন, তার একজন সেলসম্যান বা দালাল হওয়া উচিত। একজন ধর্মীয় নেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। মিয়ানমারের ক্যাথলিক চার্চ থেকে পোপ ফ্রান্সিসকে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, তিনি যাতে বিতর্কিত বিষয়ে কিছু না বলেন। কারণ সেরকম কিছু করলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এবং সেখানে খ্রিস্টানদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।

পোপ ফ্রান্সিস যখন মিয়ানমারে ভাষণ দেন, তখন তিনি তাতে ঐক্য, ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে সম্মান জানানোর কথা বললেও, ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি একবারের জন্যও উচ্চারণ করেননি। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ইয়ে লং মিন পোস্ট দেন, পোপ একজন পবিত্র মানুষ। কিন্তু তিনি মিয়ানমারে এক কথা বললেন; আবার অন্য একটি দেশে গিয়ে অন্য কথা বললেন। তিনি যদি সত্যকে ভালোবাসেন, তাহলে তার সবখানে একই কথা বলা উচিত ছিল।

 

সূত্র: আলোকিত বাংলাদেশ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন