লংগদু ইউপি নির্বাচন: বিদ্রোহের দাবানলে পুড়ছে আ’লীগ

fec-image

সারাদেশের ন্যায় পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় চলতি বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারী সপ্তম এবং সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার সাতটি ইউপিতে ভোট গ্রহণ হবে। এইজন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনী যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে তাদের প্রস্তুতি শেষ করে নিয়েছেন। চালাচ্ছেন তাদের নির্বাচনী প্রচার- প্রচারণা। এখন ৭ ফেব্রুয়ারী আসলে এসব প্রার্থীরা ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন।

ভোটযুদ্ধে অবর্তীণ হলেও বিদ্রাহের দাবানলে পুড়ছে ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ। হেবিওয়েট নেতারা মূলত আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় নেতাদের চোখের ঘুম চলে গেছে। যে কারণে নির্বাচনের গণেশ যেকোন মূহুর্তে উল্টে যেতে পারে। আশঙ্কা-শংঙ্কা নিয়ে অনেক কঠিন হিসেব করে আ’লীগের মনোনিত প্রার্থীদের ভোটযুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে।

লংগদু উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন যথাক্রমে আটারকছড়া ইউনিয়নে আ.লীগের একক প্রার্থী হয়েছেন- উপজেলা আ.লীগের সদস্য অজয় চাকমা (মিত্র) এবং কালাপাকুজ্যা ইউনিয়নে উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক ও বর্তমান ইউনিয়টির চেয়ারম্যান মোস্তফা মিয়া। মূলত এ দু’টি ইউনিয়নে আ’লীগের একক প্রার্থী রয়েছে।

বাকী ইউনিয়ন যেমন, গুলশাখালী ইউনিয়নে আ.লীগের প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়নটির আ.লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রাহী প্রার্থী হয়েছেন, ওই ইউনিয়নটির আ.লীগের নেতা রকিব হোসেন। তিনি লংগদু উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুর রহিম মিয়ার ভাইয়ের ছেলে।

বগাচত্ত্বর ইউনিয়নে আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন-ওই ইউনিয়ন আ.লীগের সহ-সভাপতি আবুল বশর। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বিদ্রাহী প্রার্থী হয়েছেন- ওই ইউনিয়ন আ.লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য বোরহান উদ্দিন।

ভাসান্যাদম ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন, ওই ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রাহী প্রার্থী হয়েছেন, ওই ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হযরত আলী। তিনি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

মাইনীমুখ ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন- উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আলী। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বিদ্রাহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন- মোহাম্মদ এরশাদ। তিনি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকারের ছেলে।

লংগদু সদর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, উপজেলা আ.লীগের সদস্য রতন কুমার চাকমা। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন, ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি কুলিন মিত্র চাকমা আদু।

এদিকে গত ২৭ জানুয়ারি দিনগত রাতে ভাসান্যাদম ইউনিয়ন আ.লীগ অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। এ ঘটনার জন্য ওই ইউনিয়নে আ.লীগের প্রার্থী ও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন এ ঘটনার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থী হযরত আলীকে দায়ী করেছে। তবে এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন ওই ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ও বিদ্রাহী প্রার্থী হযরত আলী। তিনি বলেন- তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

লংগদু উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু বলেন, দল থেকে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তারা প্রত্যোকে ত্যাগী এবং পরিক্ষিত নেতা। তাই দল অনেক হিসেব-নিকেশ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন।

উপজেলা আ.লীগের এ নেতা আরও বলেন, দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে দলের সব নেতা-কর্মীরা কাজ করছে। যারা দলীয় সিন্ধান্তের বাইরে বিদ্রাহী করেছেন এবং দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন