লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ সভাপতি রেম্রাচাই চৌধুরীসহ ৮ জন নেতাকর্মী অপহৃত

মোবারক হোসেন, লক্ষ্মীছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি বাবু রেম্রাচাই চৌধুরীসহ ৮জন উপজাতীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী অপহৃত হয়েছে।খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এ খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে কোনো সূত্র অপহৃতদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে দাবী করেছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ইতোমধ্যে অপহৃতদের উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।

সূত্রে জানা যায়, ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে জেলা আওয়ামীলীগের এক সভায় যোগ দিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি রেম্রাচাই চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম খাগড়াছড়ি যান। এসময় তারা অপহৃত হন বলে জানা গেছে। অপহৃতরা হলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি রেম্রাচাই চৌধুরীর  ভাইস চেয়ারম্যান মিলন চাকমা ও সাগরিকা চাকমা, উপজেলা আওয়ামলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লেলিন কুমার চাকমা(লেলিন), উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ত্রিলন চাকমা(দয়াধন), সাবেক বর্মাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন চাকমা, চাথোয়াই মারমা (আপ্রুসি), রতন বিকাশ চাকমা।

উপজেলা চেয়ারম্যান রেম্রাচাই চৌধুরীর ব্যক্তিগত মুঠোফোনেও কোন সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও তিনি সচরাচর ব্যবহার করেন এমন কয়েকটি নম্বারেও সংযোগ পাওয়া যাচ্ছেনা। একইভাবে অন্যান্য অপহৃত  ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বারগুলোতে চেষ্টা করে একই জবাব পাওয়া যায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান এর ব্যক্তিগত সহকারি যুকেশ বিন্দু চাকমা সাংবাদিকদের জানান, সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মটরসাইকেল যোগে খাগড়াছড়িতে গিয়েছেন তবে এখনো পর্যন্ত ফেরার খবরটি বলতে পারছেন না। অপহরণ হয়েছে এমন খবর তিনিও শুনেছেন বলে জানান। যুকেশ বিন্দু মোবাইলে বারবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাচ্ছেন না বলে জানান। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: বিল্লাল হোসেন এ ব্যাপারে অবশ্য কিছ্ইু বলতে চান নি।

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে খাগড়াছড়ি জেলায় একটি বৈঠকে অংশ নিতে ১০/১২জন নেতা গিয়েছিলেন। বিশেষ কারণে খাগড়াছড়ির অদুরে স্বনির্ভর বাজার এলাকায় চা খাওয়ার উদ্দেশ্যে গেলে সেখান থেকে রেম্রাচাইসহ অন্যরাও নিখোঁজ হয়েছেন। এই এলাকায় একটি আঞ্চলিক একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের একছত্র প্রভাব রয়েছে।

রাত ১১ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের উক্ত নেতাদের কোন সন্ধান মিলেনি। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে না এর পেছনে অন্য কোন রহস্য আছে কিনা তা এই মুহুর্তে স্পষ্ট করে বলতে রাজি হননি আপহৃতদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা। লক্ষ্মীছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো: কামরুল হাসান জানান, এমন ঘটনা শুনেছি কিন্তু এ ব্যপারে পরিবার কিংবা অন্য কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসে নি।

এদিকে অপর এক সূত্রে জানা যায়, কিছু দিন আগে উপজাতীয় একটি সংগঠন রেম্রাচাই চৌধুরীকে আওয়ামীলীগের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য হুমকি দেয়া হয়েছিল। সেই থেকে মাসাধিককাল ধরে তাকে আর দলীয় কর্মকান্ডে স্বক্রীয়ভাবে অংশ নিতে দেখা যায় নি এবং দলীয় কার্যালয়েও আগের মত আসেননি।

উল্লেখ্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে অব্যাহতি নিয়ে রেম্রাচাই চৌধুরী ইউপিডিএফ’র সমর্থনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। পরে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে রেম্রাচাই চৌধুরী দলীয় কর্মকান্ডে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মনোনীত হন। আসন্ন ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এমন অপহরণের সম্ভাবনা পুলিশ যাচাই করে দেখছে।