শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে আল্টিমেটাম দিয়ে অহযোগ আন্দোলনের হুমকি দিলেন সন্তু লারমা

10816249_10152387606947541_836817374_n

স্টাফ রিপোর্টার:

৩০ এপ্রিল ২০১৫-এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগ্রতি না হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বা অশান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলনের পথে পা বাড়াবে বলে জানিয়েছেন জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা  ওরফে সন্তু লারমা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা সরকারকে চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এই সময়সীমা বেঁধে দেন। শনিবার রাজধানী ঢাকাস্থ সুন্দরবন হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার এমপি, আইইডি নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান, মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. নীলুফার বানু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজীব মীর, চলচ্চিত্রকার রাশেদ রাইন, আদিবাসী ফোরামের সহসাধারণ সম্পাদক বিনোতাময় ধামাই প্রমুখ ব্যক্তিগণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা বলেন, চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্ম স্বার্থ বিরোধী সকল কার্যক্রম বন্ধ করা এবং চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে বিদ্যমান পরিস্থিতি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ বা অশান্তিপূর্ণভাবে ১ মে ২০১৫ থেকে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচী পালন করা হবে। চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে সরকারের অবস্থান বিষয়ক অপর এক প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা বলেন, সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছে তা অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও মনগড়া। চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির সর্বশেষ বৈঠক কখন অনুষ্ঠিত হয়েছে এই প্রশ্নের উত্তরে সন্তু লারমা বলেন, সর্বশেষ বৈঠকটি কবে হয়েছে তা তিনি স্মরণ করতে পারছেন না। তিনি বলেন এই হলো সরকারের চুক্তি বাস্তবায়নের নমুনা।

সংবাদ সম্মেলনে আই.ই.ডি.-এরনির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান তার সংহতি বক্তব্যে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা আশা করেছিলাম বাংলাদেশ বহু জাতির, বহু ভাষার, বহু ধর্মের একটি রাষ্ট্র হবে। কিন্তু তার পরিবর্তে রাষ্ট্র এক ভাষা, এক জাতি ও এক ধর্মের হয়েছে এবং আদিবাসীদের সঙ্গে রাষ্ট্র বিশ্বাসঘাতকতা করেছে’।

মানবাধিকারকর্মী এ্যাড. নীলুফার বানু বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা একটি জাতীয় ও রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য শান্তি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু সরকার তার দায়িত্ব যথাযথভাবে প্রতিপালিত করছেনা। চুক্তি সম্পাদনের পর যে পক্ষ চুক্তি বাস্তবায়ন করবে অসহযোগিতা করবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় রয়েছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, অন্যতম জাতীয় নেতা সন্তু লারমা যে আন্দোলনের কর্মসূচী দিয়েছেন এই কর্মসূচীর সাথে ভিন্নমত থাকার কোন প্রশ্নই নেই। তিনি বলেন, দেশের আপমার জনগণ জনসংহতি সমিতির এই অসহযোগ আন্দোলনের সাথে একাত্ম প্রকাশ করে এই আন্দোলনে শরীক থাকবে। এই কর্মসূচী দূর্বিসহ জীবন, সংগ্রাম ও বঞ্চনার প্রতিদিনকার নির্যাতনেরই প্রতিফলন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কায়েমী স্বার্থবাদী আমলা চক্র, সামরিকতন্ত্র এবং উগ্র মৌলবাদী শক্তি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির প্রতিটি ধারা-উপধারাকে বাধাগ্রস্থ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের এই এক-দশমাংশ অঞ্চলে অপারেশন উত্তরণ কর্মসূচী ও শান্তকরণ কর্মসূচীর পেছনে সরকার বছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সেটলারদের মাঝে বিতরণ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি, বলেন সরকার তাদেরকে ব্যবহার করছে মানব ঢাল হিসেবে। পংকজ ভট্টচার্য বলেন, ‘সরকারের একটি অংশের মধ্যে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে পাকিস্তানী ভাবধারা কাজ করছে। এই সকল পাকিস্তানপন্থী চক্রের চিন্তাধারায় সরকার অনেকাংশে জিম্মি। যার ফলে সরকার আদিবাসীদের শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়, চুক্তি করে, কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন করে না’।

সংবাদ সম্মেলনে সন্তুলারমা একটি লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। তাতে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রায় ছয় বছর অতিক্রান্ত হলেও কতিপয় বিষয় বা কর্ম তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর ব্যতীত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন বিষয় ও কার্যাবলী কার্যকরকরণ এবং এসব পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিতকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১-এর বিরোধাত্মক ধারা সংশোধন পূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ; আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তু ও প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ ও তাদের স্ব স্ব জায়গা-জমিতে পুনর্বাসন; সেনা শাসন ‘অপারেশন উত্তরণ’সহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার; অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি ইজারা বাতিলকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকুরীতে জুম্মদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী অধিবাসীদের নিয়োগ; চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ সংশোধন; সেটেলার বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয়গুলো বাস্তবায়নে সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

সন্তু লারমা বলেন, সরকার একদিকে যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়নে তালবাহানা করে চলেছে, অন্যদিকে তেমনি চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে দেশে-বিদেশে অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক ও মনগড়া বক্তব্য প্রচার করে আসছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের অনেক মন্ত্রী-আমলারা প্রচার করে আসছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মোট ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং অবশিষ্ট ধারাগুলোর মধ্যে ১৫টি ধারার আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে এবং বাকি ৯টি ধারার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে সরকারের উক্ত বক্তব্য বা প্রতিবেদন সর্বাংশে সত্য নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মূল্যায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সর্বমোট ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র ২৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। আর অবাস্তবায়িত রয়েছে ৩৪টি ধারা এবং আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে ১৩টি ধারা। তার অর্থ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই-তৃতীয়াংশ ধারা এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার কেবল চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বছরের পর বছর ধরে অবাস্তবায়িত অবস্থায় রেখে দিয়ে কিংবা চুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কে অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক ও মনগড়া তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে ক্ষান্ত থাকেনি, অধিকন্তু চুক্তি বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্মস্বার্থ বিরোধী আইন প্রণয়ন ও কার্যক্রম হাতে নিয়ে চলেছে। চুক্তির অবাস্তবায়িত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নিয়ে সরকার উল্টো পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে বা পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য কোন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সাথে আলোচনাক্রমে এবং পরামর্শ করে আইন প্রণয়নের যে বিধান রয়েছে সেই আইনী বিধিব্যবস্থাকে পদদলিত করে একতরফাভাবে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন সংশোধন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন প্রণয়ন এবং রাঙ্গামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

জেএসএস সভাপতি বলেন, সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় জুম্মদের আবাসভূমি ও ধর্মীয় স্থানসহ রেকর্ডীয় ও ভোগদখলীয় ভূমি বেদখল এবং স্বভূমি থেকে তাদেরকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি নানা উদ্যোগের পাশাপাশি বিশেষ করে সরকারি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই বেদখলের প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে সেনাক্যাম্প স্থাপন ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে যত্রতত্র বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন ও সম্প্রসারণের তৎপরতা। এর সাথে পাল্লা দিয়ে আদিবাসী জুম্মদের আবাসভূমি, জুমভূমি, ভোগদখলীয় ও বিচরণভূমিতে অহরহ গড়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন পর্যটন স্পট, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, বিলাসবহুল মোটেল ইত্যাদি নানা বিনোদন ও বাণিজ্য কেন্দ্র।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। সরকারের চুক্তি বাস্তবায়নে অব্যাহত গড়িমসি ও কায়েমী স্বার্থবাদীদের ষড়যন্ত্রের কারণে রাষ্ট্রযন্ত্রে বা রাষ্ট্রযন্ত্রের বাইরে ঘাপতি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী এবং উগ্র জাতীয়তবাদী শক্তি তাদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে এসব অপশক্তি তিন পার্বত্য জেলায় সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জঙ্গী তৎপরতা জোরদার করেছে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে পশ্চাদভূমি হিসেবে ব্যবহার করে সারাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গী তৎপরতা বিস্তৃত করে চলেছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ সম্পর্কে, তিনি বলেন, অপরদিকে প্রশাসনের একটি বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ নামধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও সংস্কারপন্থী নামে খ্যাত বিপথগামী গোষ্ঠী অবাধে চাঁদাবাজি, অপহরণ, হত্যা ইত্যাদি সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর এযাবৎ এই চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা জনসংহতি সমিতির ৯৩ জন সদস্যসহ তিন শতাধিক লোককে খুন ও অসংখ্য নিরীহ লোককে অপহরণ ও নির্যাতন করেছে। সরকারের নির্লিপ্ততা তথা প্রকারান্তরে প্রত্যক্ষ মদদদানের কারণে সংস্কারপন্থী-ইউপিডিএফ এভাবে একের পর এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে।

সন্তু লারমা বলেন, বর্তমানে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। সরকারের আলামত দেখে এটা স্পষ্ট বলা যায় যে, সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের আর কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে না। দেশ-বিদেশের জনমতকে বিভ্রান্ত করার জন্য বড়জোর বুলিতে চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাবে। আর চুক্তি বাস্তবায়নের নামে কোন কিছু উদ্যোগ নিলেও তা চুক্তি বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে চুক্তি পরিপন্থী বা জুম্ম স্বার্থ-বিরোধী কার্যক্রম হাতে নেবে; যার মূল লক্ষ্যই হলো আদিবাসী জুম্মদের জাতিগতভাবে নির্মূল করা আর অমুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করা। এমতাবস্থায় আর বিলম্ব না করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে সময়সূচি ভিত্তিক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামের যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি জন্য সরকারই দায়ি থাকবে। সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এই ঘোষণা করছে যে-
আগামী ৩০ এপ্রিল ২০১৫-এর মধ্যে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সময়সূচি ভিত্তিক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করলে ১ মে ২০১৫ সাল থেকে- (১) পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করা হবে এবং (২) চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্মস্বার্থ বিরোধী সকল কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ আন্দোলন জোরদার করা হবে।

 

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন