“ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জামিন পেলেন বাঘাইছড়ির পৌর মেয়র আলমগীর”

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌরসভার অফিসের একটি কক্ষ ভেঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র টাকা চুরির অভিযোগ এনে পৌরসভার একজন কাউন্সিলর বাদি হয়ে মেয়র মোঃ আলমগীর কবির ও তার বড়ভাই নিজাম উদ্দিনকে আসামী করে বাঘাইছড়ি থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অনাস্থা দেয়ার দুইদিন পর গত ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলা দায়ের করা হয়। দায়ের করা ঐ মামলায় বুধবার রাঙামাটি আদালত থেকে জামিন নেন মেয়র ও তার বড় ভাই। পৌর মেয়রের অভিযোগ একটি মহল রাজনৈতিকভাবে হেয় ও হয়রানির করার লক্ষে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অনাস্থা নাটকের পর মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন মামলায় উল্লেখিত সময়ে তিনি দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় ও তার বড় ভাই তার কর্মস্থলে ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর বাঘাইছড়ি পৌরসভার লাইসেন্স শাখার রুম ভেঙ্গে মেয়র আলমগীর কবিরের বড় ভাই মেয়রের বিরুদ্ধে আনিত অনাস্থা প্রস্তাবের কাগজসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নগদ ৫হাজার টাকা নিয়ে গেছে অভিযোগ এনে ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আলী বাদি হয়ে ৯ সেপ্টেম্বর বাঘাইছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মেয়রের বড় ভাই নিজাম উদ্দিনকে প্রধান আসামী ও মেয়রকে ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামী করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অনাস্থা আনার ঘটনার পরের দিন একই ঘটনা উল্লেখ করে বাঘাইছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়। ঐ জিডিতে টাকা চুরি ও মেয়রের সংশ্লিষ্টতার বিষয় উল্লেখ ছিলো না। কিন্তু একদিন পর একই ঘটনা ভিন্নভাবে উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার কয়েকদিন আগ থেকে পৌর মেয়র বাঘাইছড়ির বাইরে ছিলেন। অভিযুক্ত মেয়রের বড় ভাই নিজাম উদ্দিন ঘটনার দিন তার কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে পৌরসভার যে শাখার কক্ষের তালা ভেঙ্গে কাগজপত্র ও টাকা খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে এ ব্যাপারে ঐ শাখার দায়িত্বরত কর্মচারী কিছুই জানেন না। বিভাগীয় নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তা বা কর্মচারী বাদি হয়ে মামলা করার কথা থাকলেও একজন কাউন্সিলর মামলার বাদি হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারী ও পৌরবাসীর মধ্যে সন্দেহের উদ্ভব ঘটেছে।

এ ব্যপারে লাইসেন্স শাখার দায়িত্বরত কর্মচারী মাসুম জানান, তার কক্ষের তালা ভাঙ্গা বা কাগজপত্র ও টাকা চুরির কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন কক্ষের ও ড্রয়ারের চাবি তার বাসায় থাকে এবং লাইসেন্স শাখায় নগদ কোন টাকা থাকে না। মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। পৌর সভার সচিব মোঃ নজরুল জানান, ঘটনার দিন তিনি ছুটিতে খাগড়াছড়িতে ছিলেন। তিনি বলেন, প্যানেল মেয়র আব্দুশ শুক্কুর তাকে খাগড়াছড়ি থেকে ডেকে এনে মামলা করার কথা বলেন। ঘটনার দিন তিনি ছুঠিতে থাকায় আইনগত কারণে তিনি মামলার বাদি হতে পারেননি। তিনি জানান, লাইসেন্স শাখার কর্মচারী লাইসেন্স পরিদর্শক এ ঘটনার ব্যাপারে তাকে কোন অভিযোগ করেননি। অফিসিয়াল ঘটনা হিসেবে তদন্ত করার পর বিভাগীয় প্রধানের সুপারিশক্রমে মামলা করার কথা বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদি ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আলীর মুটোফোনে কল করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কথা বলতে গড়িমসি করেন এবং পরে ফোন করবেন বলে মোবাইল কেটে দেন। এরপর তার সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র মোঃ আলমগীর কবির বলেন, যেসব অনিয়মের অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়া হয়েছে সেসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে অনাস্থা নাটক করেছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হয়রানীর লক্ষে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তিনি প্যানেল মেয়র আব্দুশ শুক্কুর মিয়ার বিরেুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, তিনি নির্বাচনের পর থেকে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচিত মেয়রকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়ার লক্ষে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছিলো। ইতোপূর্বে তিনি ২শ মেঃ টন খাদ্য শস্য দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নিজের নামে বরাদ্ধ নিয়েছেন। এসব খাদ্য শষ্য নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ এসেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন