১০ মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড কুতুবদিয়া, আহত ৩০

fec-image

মাত্র ১০ মিনিটের স্থায়ীত্বে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কুতুবদিয়া। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝড়ের এ তান্ডব চলে। এর আগে ঘুর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর হালকা বাতাস বইছিল দ্বীপ জুড়ে। উপজেলা প্রশাসন জরুরি বৈঠক করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শে প্রচারণা করতে থাকেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার পর থেকেই বাতাসের গতিবেগ বাড়তে থাকে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মানুষ।

উপজেলা সদরসহ বাজারগুলোতে দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ পূর্ব দিক থেকে প্রচন্ড গতিবেগে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল ১০ থেকে ১৫ মিনিট। এই অল্প সময়েই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সর্বত্র কাঁচা-ঘরবাড়ি, গাছ-পালা, দোকান-পাট ভেঙে পড়ার খবর আসতে থাকে। প্রধান সড়ক আজম রোডে উভয় পাশের অন্তত ১০ হাজার গাছ উপড়ে গিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। অন্তত ৪ হাজার কাঁচা-ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে ও বাতাসে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। মোবাইল নেটওয়ার্কও চলে যায়। বুধবারও মোবাইল ও ইন্টারনেট সুবিধায় চরম বিঘ্ন ঘটে। গাছ পড়ে ও দেয়াল চাপায় আহত হয়েছে প্রায় ৩০ জন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১৮ জন। চৌধুরী পাড়ায় দেয়াল চাপায় আহত হয় রাজু ও আজিজ নামের দুই যুবক। ৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

আজম রোডে সেন্টার নামক স্থানে ৭টি টিনের দোকান উড়ে গেছে। বটতলী স্টেশনে ৬টি কাঁচা দোকান উড়ে গেছে। ধুরুং বাজারের জীপ স্টেশনের একটি মার্কেটে টাঙ্গাইল সুইটস, একটি ফার্মেসিসহ ৩টি দোকান উড়ে যায়। আলী আকবর ডেইল মুরালিয়া বড়ঘোপ আজম কলোনি, সড়কে অন্তত ৫ শতাধিক গাছ উড়ে পড়েছে। উত্তর ধূরুং ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম সিকদার বলেন, হঠাৎ ঝড়ে কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। পুকুরে বৃষ্টির পানি ঢুকে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরের মাছ।

মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মুজিব উল্লাহ জানান, ধুরুং জেটি ঘাট এলাকায় সতরুদ্দিন তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা পুরোটাই উড়ে গেছে । এ মাদরাসায় ঝড়ে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে । স্থানীয় বোটের মালিক ইসমাঈল বাদশা, আব্দুল আজিজ ও নজির আহমদ জানান, একই স্থানে নোঙর করে রাখা ৩টি লবণের ট্রলার অর্ধেকটা করে ভেঙে পড়েছে বলে

কাঁচা-ঘরবাড়ি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানিয়েছেন। এ দিকে ঘূর্ণিঝড় হামুনের তান্ডবে ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন দেখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর তঞ্চ্যাঙ্গাসহ একটি টিম বুধবার ভোর থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।

প্রাথমিক ক্ষয়-ক্ষতির মধ্যে সাড়ে ৫ শতাধিক কাঁচা ঘর সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৩ হাজারের বেশি ঘর আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রকল্প কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কুতুবদিয়া, ঘূর্ণিঝড়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন