২২ দিন ২৭ জেলায় ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধ ঘোষণা
মহেশখালী প্রতিনিধি:
মা ইলিশ সংরক্ষণে বিশেষ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রোববার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দেশের ২৭টি জেলায় এই ইলিশ ধরার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে ২২ দিন লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী জেলার সব নদ-নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত সাত হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাসহ সারা দেশে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার আইন জারি করেছে।”
এ সময়ে ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন, মজুদ বা বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, মাছঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজার, চেইনশপে নিষেধাজ্ঞার সময়ে অভিযান চালানো হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, নৌ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং মৎস্য অধিদপ্তর এ অভিযানে অংশ নেবে।
“৫-৭ বছর আগেও মানুষ ইলিশ খেতে পারত না। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কঠিন পদক্ষেপের ফলে আজ ইলিশ মাছের ছড়াছড়ি। ১৫-২০ বছরের মধ্যে এবার অলি-গলিতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, গবীর মানুষও ইলিশ কিনে খেতে পারছে,” বলেন ছায়েদুল।
চান্দ্রমাসের ভিত্তিতে প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে গত বছর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার দিন এবং এর আগে তিন ও পরের ১১ দিনসহ মোট ১৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। এবার আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার দিন এবং এর আগে চার ও পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় পার হওয়ার পরও মা ইলিশ সমুদ্রে ফিরে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে। এজন্য গত বছর ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় ১১ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৫ দিন করা হয়। এরপরও মা ইলিশ ধরা পড়ায় এবার এই সময় ২২ দিন করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানের সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাকে ইলিশের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণার কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। এই ২২ দিন ইলিশ আহরণ, বিতরণ, বিপণন, কেনাবেচা, পরিবহন, মজুদ, বিনিময়সহ সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এ সময় মাছের আড়ত, হাটবাজার ও বিপণিবিতানগুলোতে অভিযান পরিচালিত হবে বলেও জানানো হয়।