ঈদুল আজহার উৎসবের একটি অঙ্গ হচ্ছে কোরবানি :  তারেক রহমান

fec-image

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে দেওয়া পোস্টে এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।

ওই পোস্টে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। তাদের অব্যাহত সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য কামনা করি।

ঈদ মোবারক।’
তিনি লেখেন, ‘ঈদুল আজহা অর্থ ত্যাগের উৎসব। এই উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ত্যাগ করা। পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনে বলা হয়েছে, মাংস বা রক্ত কোনোটাই আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, পৌঁছায় তোমার মনের পবিত্র ইচ্ছা’।

বিশ্বাসী মানুষের পবিত্র ইচ্ছা হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পশু কোরবানি দেয়। আত্মশুদ্ধি, আত্মতৃপ্তি আর আত্মত্যাগের সুমহান বার্তা নিয়ে প্রতি বছরই ঘুরে আসে পবিত্র ঈদুল আজহা। দ্রব্যমূল্য, সামাজিক অনাচার ও নানামুখী সংকটের অভিঘাত সত্ত্বেও দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মন ঈদের অমলিন আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে পরিপূর্ণ।
দেশের জনগণ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদের এক কঠিন সময় পার করেছে।

গত বছর ৫ আগস্টে ফ্যাসিবাদী চক্রের পতনের পর দেশে কিছুটা স্বস্তির পরিবেশে এবার মানুষ ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। ফ্যাসিবাদী আমলে তাঁবেদার অপশক্তির অবৈধ ক্ষমতা লোভের কারণে রাষ্ট্র ও সমাজে নীতি, নৈতিকতা, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের চূড়ান্ত অবক্ষয় ঘটে। এখন সবাই মিলে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নত নৈতিকতা ও পাহাড়সম বৈষম্য দূরীভূত করতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে সর্বত্র। যেন বেপরোয়া লুটপাট, দুর্নীতি ও টাকা পাচারের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না হয়।

ত্যাগের উৎসব হলো ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহার উৎসবের একটি অঙ্গ হচ্ছে কোরবানি। পশু কোরবানি হলো চিত্তশুদ্ধি ও পবিত্রতার একটি মাধ্যম। ধৈর্য ও বিশ্বাসের পরীক্ষার ঐতিহ্যের ধারা বেয়েই কোরবানি মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য করা হয়েছে। ঈদুল আজহার ত্যাগের চেতনা সমাজে ঐক্য, সংহতি ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। কোরবানির যে মূল শিক্ষা তা আমরা যদি নিজ জীবনে প্রতিফলিত করে মানব কল্যাণে ব্রতী হই তাহলে নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ করতে পারব। বিশ্বাসীদের সে চেষ্টায় আত্মনিবেদিত থাকতে হবে।

কোরবানি ঈদ বিশ্ববাসী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের দ্বিতীয়টি। উৎসব হলো সর্বজনীন, এর প্রাঙ্গণে সমবেত হয় সব মানুষ। উৎসব মানুষকে পরস্পরের সাথে শুভেচ্ছা বোধে উদ্বুদ্ধ করে।

বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সবার পক্ষে ঈদের আনন্দ যথাযথভাবে উপভোগ করা কঠিন হবে। মূল্যস্ফীতির তীব্রতা, খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, গৃহস্থালিতে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের তীব্র সংকটে জনজীবন সীমাহীন দুর্দশায় নিপতিত। স্বল্প আয়ের মানুষরা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় দিনযাপন করছে। ঈদের আনন্দের দিনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে-সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। ঈদের আনন্দের উৎসব ভাগ করে নিতে হবে এক কাতারে সবাইকে।

ঈদুল আজহা সবার জীবনে বয়ে আনুক সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, সমাজে সৃষ্টি হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের মেলবন্ধন, মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে এই প্রার্থনা জানাই।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কোরবানি, তারেক রহমান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন