উখিয়ায় বহাল তবিয়তে রুমখাঁ বাজারের অবৈধ করাতকল, পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়
কক্সবাজারের উখিয়ায় লোকালয়ে মন্দিরের পাশে বিরামহীনভাবে অবৈধ করাতকল। ফলে মারাত্মকভাবে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের
ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে স্থানীয় বাসিন্দা।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উখিয়ার ঐতিহ্যবাহী রুমখাঁ বাজারে জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া গ্রামের আলী আহমদের ছেলে মোস্তাক আহমদ (৩৫) ও হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বাজার পাড়া এলাকার আবু ছৈয়দের ছেলে মোবারক হোসেন অবৈধ সমিল স্থাপন করে বনাঞ্চল ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
এছাড়াও রাতদিন সমিল চালানোর কারণে ব্যাপক শৌরগোল ও বিকট শব্দে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। একই সাথে পাশ্ববর্তি মসজিদ ও মন্দিরে প্রার্থনারত ধর্মপ্রিয় মানুষেরও ব্যাপক সমস্যা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, বিরামহীন সথমিলের বিকট শব্দে আমার স্ত্রীর মাইগ্রেন পেইনসহ ছেলে-মেয়েরা মানসিক রোগসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে অবৈধ সমিল মালিকদের বারবার বলার পরও তারা উল্টো গালিগালাজ, মারধরের হুমকি ধমকি দিতে থাকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক কাজী তারিকুর রহমান জানান, অবৈধ সমিল গুলোর বিষয়ে আমরা অবগত। ইতিমধ্যে এসব সমিল উচ্ছেদ করার জন্য সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে একাধিক বার বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু সময় সল্পতা ও জনবল সংকটের কারণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে বসে দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে অবৈধ সমিল মালিক অভিযুক্ত মোস্তাক আহমদ বলেন, উখিয়া উপজেলায় ৩৫টি অবৈধ সমিল আছে। তৎমধ্যে ৫টি সমিলও যদি উচ্ছেদ করা হয়। তবে নিজ দায়িত্বে আমার মালিকানাধীন সমিলটি উচ্ছেদ করবো। তিনি এও বলেন, আমার সমিলটি গত ২৫ বছর ধরে চালু আছে এবং উক্ত মিলের বিরুদ্ধে একটি মামলাও চালু আছে। রুমখাঁ বাজার তিনটি অবৈধ সমিল রয়েছে বলে তিনি জানান।
অবৈধ সমিল মালিক মোবারক হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার কোন সমিল নেই। আমার মালিকানাধীন সমিলটি গত ৫ মাস আসে বিক্রি করে দিয়েছি।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সনাতন ধর্মাবলম্বী এক ব্যক্তি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, রুমখাঁ বাজারের মতন জনবহুল এলাকায় কয়েকটি সমিলের বিকট শব্দে ধর্মীয় উপাসনা ঠিকমত করা যাচ্ছে না। ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনাসহ বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অবৈধ সমিল গুলো উচ্ছেদ করে রুমখাঁ বাজারে বসবাসের পরিবেশ রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।