চকরিয়ায় রাতের আঁধারে ১৫০ একর লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব : ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় রাতের আঁধারে একশত পঞ্চাশ একর লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীরা। এতে লবণ চাষি ও মালিকদের অন্তত ৬০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন।
বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নস্থ কাঁকড়াদ্বিয়া নামক এলাকায় লবণ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে লবণ চাষীরা মাঠে গেলে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃশ্য দেখতে পান।
জানা গেছে, উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও অপরাপর লোকজনের মালিকানাধীন ১শত ৫০ একর জমি বদরখালী ইউনিয়নস্থ কাঁকড়াদ্বিয়া এলাকায় চিংড়ি চাষের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লিজ নেন। বর্ষা মওসুমে চিংড়ি চাষ হলেও শুষ্ক মৌসুমে লবণ পানি ঢুকিয়ে এসব জমিতে লবণ উৎপাদন করা হয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় শতাধিক লবণ চাষীকে এই জমি বর্গা হিসেবে দেয়া হয়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে এসব চাষিরা ওই জমি লবণ উৎপাদনের উপযোগী করে তোলেন। কয়েকদিন আগে পলিথিন বসিয়ে মাঠে লবণ পানি ঢুকানো হয়। লবণও তৈরি হচ্ছে। এই সময়টাতে এসে বুধবার দিবাগত রাতে বদরখালী নতুনঘোনা এলাকার লবণ ব্যবসায়ী নুরুন্নবী ও তার দুই ছেলেসহ ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে রাতের আঁধারে একশত পঞ্চাশ একর লবণ মাঠের জমির পলিথিন কেটে দিয়ে লবণ নষ্ট করে ও খামার বাসায় তান্ডব চালিয়েছে। এতে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
চিংড়ি ঘেরের মালিকপক্ষ নজরুল ইসলাম আরো বলেন, কি কারণে কেন লবণ মাঠে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানি না। লবণ মাঠের এহেন অমানবিক ঘটনার কারণে গরীব শতাধিক কৃষক তাদের পুঁজি হারিয়ে এখন পথে বসবে। এই ঘটনার বিষয়ে থানায় এজাহার দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত লবণ চাষি সাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনা এলাকার মনছুর আলম বলেন, চলতি মৌসুমে ‘লাভের আশায় পাঁচ একর জমি বর্গা নিয়ে লবণ চাষ শুরু করি। প্রতি একর জমি চাষের জন্য তৈরি করতে অন্তত ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমি কী করব ভেবে পাচ্ছি না। নতুন করে আবার মাঠের কাজ শুরু করতে গেলেও অনেক সময় অতিবাহিত হবে। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় আমার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।
বদরখালী সাতডালিয়া পাড়ার লবণ চাষি ছরওয়ার আলম বলেন, ২০ কানি জমি বর্গা নিয়ে এক মাস পূর্বে আমি লবণ মাঠ তৈরি করেছি। লবণ উৎপাদনের শুরুতে হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসী রাতে এসে লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দেয়ায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
একই ভাবে স্থানীয় লবণ চাষী দলিলুর রহমানসহ একাধিক চাষিরা বলেন, লবণ চাষিরা কোন কিছু বুঝার আগেই অতর্কিত ভাবে রাতের আঁধারে একদল স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী এসে একেরপর এক লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দেয়। এমন কোন মাঠ নেই পলিথিন কাটেনি। এতে চাষিদের উৎপাদিত ১৫০ একর লবণ মাঠ নষ্ট করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মনজুর কাদের ভুঁইয়া বলেন, লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দেয়ার বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।