চকরিয়ায় অপহরণের ১০দিনেও সন্ধান মেলেনি চার সন্তানের জননী
কক্সবাজারের চকরিয়ায় অপহরণের ১০দিন পরও সন্ধান মেলেনি বেবি আক্তার (৩৩) নামের চার সন্তানের জননী। অপহ্নত বেবি আক্তার উপজেলা কাকারা ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডস্থ মাইজ কাকারা এলাকার প্রবাসী নুরুল আবছারের স্ত্রী।
এ ঘটনায় অপহ্নত এর শ্বাশুড়ি মোস্তফা বেগম বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে। গত ৭আগস্ট রাত সাড়ে সাতটার দিকে দুর্বৃত্তরা ওই গৃহবধুকে মাইজ কাকারা এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চান। কিন্তু শনিবার (১৭আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তার সন্ধান দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ কেউ। এতে এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে গৃহবধু বেবি আক্তারের সন্ধান না পাওয়ায় চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছে তার তিন শিশু সন্তান নিয়ে পরিবারের সদস্যদের। কোনো কিছুতেই যেন থামছে না অপহ্নত গৃহবধুর শিশুদের কান্না।
অপহ্নত গৃহবধুর শ্বাশুড়ি মোস্তফা বেগম ও পরিবারের দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের আলী মিয়া সিকদার পাড়া এলাকার মিনহাজ উদ্দিনের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা, একই এলাকার কামাল উদ্দিন প্রকাশ বর্মাইয়া কামালের স্ত্রী মিনু আক্তার, সিকদার পাড়া রাস্তার মাথা এলাকার নাছির উদ্দিনের স্ত্রী বেবি আক্তার, আলী মিয়া সিকদার পাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী জন্নাতুল ফেরদৌস ও বটতলী কসাইপাড়া এলাকার আলা উদ্দিনের স্ত্রী মুক্তা এরা সবাই স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য হয়। অপহ্নত বেবি আক্তারের সাথে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের মধ্যে ব্যাংকের ঋনের টাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে অপহ্নত গৃহবধুকে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋনের টাকার বিষয়ে কথা রয়েছে বলে ওই সদস্যরা তাকে সুকৌশলে বসতঘর থেকে বাহির করে তার দুগ্ধপোষ্য দশ মাসের শিশু সন্তান মাওয়া মনিকে কোলে নিয়ে বের হয়।
ওই সময় গৃহবধু বেবি আক্তারকে গ্রামীণ ব্যাংকের মহিলা সদস্যদের ইন্ধনে ও যোগসাজসে আলী মিয়া সিকদার পাড়া এলাকার মিনহাজ উদ্দিন একই এলাকার কামাল উদ্দিন প্রকাশ বর্মাইয়া কামাল ও সিকদার পাড়া রাস্তার মাথা এলাকার নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে মুখ চেপে ধরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এর পর পরই গৃহবধু বেবি আক্তার ও তার শিশু সন্তান মাওয়া মনির নাম ধরে বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি ডাকাডাকি করলে অপহরণকারী সদস্যরা গ্রামীণ ব্যাংকের সমিতির সদস্যদের বৈঠক সেরে চলে আসবে বলে কথা দিয়ে চলে যান অভিযুক্তরা। এর পর থেকে গৃহবধু বেবি আক্তারকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান না পেয়ে গত ৯আগস্ট শ্বাশুড়ি মোস্তফা বেগম বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। বিগত ১০দিন ধরে গৃহবধু বেবি আক্তারের সন্ধান না পাওয়ায় চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছে তার তিন শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের।
তবে পরিবারের সদস্যদের ধারণা, গৃহবধুর বেবি আক্তারকে কৌশলে অপহরণ করে আটক করে রেখেছে বলে তারা ধারণা করেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তারা দাবি করেছেন, অপহ্নত গৃহবধু বেবি আক্তার ও তার দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তানকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পাওয়ার জন্য তারা দাবি করেন।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত ওসমান বলেন, অপহরণের ঘটনাটি সঠিক নয়। বেবি আক্তারকে কেউ অপহরণ করেনি। তার কাছ থেকে এলাকার বিভিন্ন লোকজন প্রায় কোটি টাকা মতো ধার-দেনা পাচ্ছে, সে ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাকে খুঁজে বের করতে আমরাও অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) তদন্ত এস.এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, নিখোঁজ গৃহবধুর সন্ধানে পুলিশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে থানার এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাকে খুঁজে বের করতে পুলিশের সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।